সকেট বোমা। ডোমকলে। ছবি সাফিউল্লা ইসলাম
ভোটের মুখে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অজস্র বোমা উদ্ধার হচ্ছে। এত সব বোমা তৈরি করছে কারা, সেই প্রশ্ন উঠছে। প্রশ্ন উঠছে, এই বোমার দর কত?
তারই যেন উত্তর মিলল, গত ২৪ জুন বেলডাঙা মহ্যমপুর নতুন পাড়ায় বোমা বিস্ফোরণে নিহত আলিম শেখের ঘটনার তদন্তে। ওই এলাকায় ৪৫টির বেশি সকেট বোমা উদ্ধার হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আলিমের দেহ যে স্থান থেকে উদ্ধার হয়, তার কাছে একটা হাতে লেখা চিরকুট ছিল। সেখানে লেখা রয়েছে ৮০০০ টাকায় তার সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল।
স্থানীয় সূত্র জানাচ্ছে, সকেট বোমা তৈরির এমন চুক্তি হয়। তবে এক জনই হোমা বানালে, এক রকম চুক্তি, সঙ্গে সহযোগীরা থাকলে মজুরি আলাদা। এক্ষেত্রে এই ব্যক্তির সঙ্গে আরও তিন জন ছিল বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে বোমা যারা তৈরি করে তারা ৫০০০ থেকে ৮০০০ টাকা পর্যন্ত পারিশ্রমিকই নিয়ে থাকে। এক দিনে। ৫০০-৭০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হয় এই সকেট বোমা। তবে এই দাম চাহিদা অনুযায়ী বাড়ে।
বোমার সরঞ্জাম আসে কোথা থেকে? পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জেলায় এই মশলা আসে সাধারণত দুই চব্বিশ পরগনা, নদিয়া, বীরভূম থেকে চোরা পথে। আবার জেলা সংলগ্ন ঝাড়খণ্ড, বিহার থেকেও নানা হাত ঘুরে এই বোমার উপাদান চলে আসে। বিভিন্ন প্রকার মশলা ব্যবহারের পর সেগুলো লোহার কাটা পাইপে ঢোকান হয়। তারপর সেই কাটা পাইপের দুটো দিক লোহার ঢাকনা দিয়ে বন্ধ করা হয়। এগুলো স্থানীয় কামারশালা, লেদ কারখানায় প্রস্তুত হয়। যে মাপের পাইপ তার ঢাকনা সেই রকম। যারা এই বোমা কারবারে যুক্ত তাদের মুখে শোনা যায় এই পাইপের ঢাকনা টাইট করতে গিয়েই বোঝা যায় বোমা তৈরিতে কে কত পারদর্শী। অনেক ক্ষেত্রে এই ঢাকনা বেশি টাইট বা আঁটো হয়ে গেলে তা আচমকা ফেটে যায়। সেখানেই দুর্ঘটনা ঘটে।
বেলডাঙার প্রাক্তন বিধায়ক কংগ্রেসের সফিউজ্জামান বলেন, “তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী বোমা বানাতে গিয়ে মারা যায়। বিভিন্ন পারিশ্রমিকে তারা কাজ করে।” উত্তরে বেলডাঙার বিধায়ক হাসানুজ্জামান বলেন, “আমরা বরাবর শান্তির পক্ষে। কোনও ঘটনা ঘটলে পুলিশ দেখবে। এখানে দল কোনও ভাবে আসছে না।” মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার সুরিন্দর সিংহ বলেন, ‘‘আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা উদ্ধার হচ্ছে। পুলিশ সক্রিয়। তাই গ্রেফতারও হচ্ছে।’’