Coronavirus

রুজি হারানোর আশঙ্কায় স্ট্যাম্প ভেন্ডাররা

এমনিতে লকডাউনের জন্য প্রায় দেড়মাস ধরে বন্ধ জমি বাড়ির রেজিস্ট্রেশন। ফলে আদায় হচ্ছে না রাজস্ব। এই অবস্থায় গত ২০ এপ্রিল থেকে রাজ্যের অর্থ দফতর ই-রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চালু করেছে।

Advertisement

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২০ ০৩:৪৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

লকডাউনের মধ্যে চালু হয়ে গেল জমি, বাড়ি-সহ যে কোনও সম্পত্তির অনলাইন রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি। যার জেরে রুজি হারানোর আশঙ্কায় কয়েক হাজার স্ট্যাম্প ভেন্ডার বা সরকারি লাইসেন্সপ্রাপ্ত স্ট্যাম্প বিক্রেতা।

Advertisement

এমনিতে লকডাউনের জন্য প্রায় দেড়মাস ধরে বন্ধ জমি বাড়ির রেজিস্ট্রেশন। ফলে আদায় হচ্ছে না রাজস্ব। এই অবস্থায় গত ২০ এপ্রিল থেকে রাজ্যের অর্থ দফতর ই-রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চালু করেছে। যার ফলে এখন বাড়িতে বসেই রেজিস্ট্রেশন করানো যাবে। ই-রেজিস্ট্রেশন করার পর প্রভিশনাল ডিডও পেয়ে যাবেন ক্রেতা। রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রয়োজনীয় ক্রেতা-বিক্রেতার ছবি, হাতের ছাপ ইত্যাদি লকডাউন ওঠার পর সংশ্লিষ্ট অফিসে জমা দিলেই হবে। এই প্রক্রিয়া চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন রাজ্যের স্ট্যাম্প ভেন্ডাররা। কারণ, সম্পত্তি কেনাবেচার ক্ষেত্রে নতুন ব্যবস্থায় ‘নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প’-এর দরকার পড়বে না।

সম্পত্তি কেনাবেচার ক্ষেত্রে ই-ডিড চালু হওয়ায় সম্পত্তি রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত সরকারকে প্রদেয় সমস্ত অর্থ সরাসরি অনলাইনের মাধ্যমে দেবেন ক্রেতা। স্ট্যাম্প পেপারের কোনও দরকারই থাকবে না। ফলে এই গোটা প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েক হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কায় দিন গুনছেন। লকডাউনের মধ্যে জেলায় জেলায় এ নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে স্ট্যাম্প ভেন্ডারদের মধ্যে। সোমবার তাঁরা বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর কাছে দরবার করবেন বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

স্ট্যাম্প পেপারের ব্যবস্থা আমূল বদলে দিচ্ছে ই-ডিড ব্যবস্থা। যেখানে স্ট্যাম্প পেপারের দরকারই পড়বে না। সাদা কাগজে কাজ চলে যাবে। সরকারের ঘরে টাকা জমা পড়বে অনলাইনে। এ রাজ্যে এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করছে ওয়েস্টবেঙ্গল স্ট্যাম্প ভেন্ডার অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক নির্মলকুমার ভট্টাচার্য জানান, ২০০০ সাল থেকে কেন্দ্রের উদ্যোগে রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থায় হাতে লেখা দলিল বদলে যাওয়া শুরু হয়েছে। স্ট্যাম্প ভেন্ডারেরা তখন থেকেই আশঙ্কায় ভুগছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘২০১১ সালে নতুন সরকার আসার পর আমরা এই বিষয়ে বার বার বলা সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। উল্টে এমন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে যার জেরে এই রাজ্যে স্ট্যাম্প ভেন্ডারেরা অবলুপ্ত হওয়ার মুখে। এ নিয়ে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। সেই মামলার এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। এরই মধ্যে লকডাউনের সুযোগে ই-রেজিস্ট্রেশন চালু করে দেওয়া হল।”

সংগঠনের নদিয়া জেলা সভাপতি মতিশকুমার মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “এমনিতে ২১ মার্চের পর থেকে আমাদের যাবতীয় উপার্জন বন্ধ। তার মধ্যে এই সিদ্ধান্ত কফিনে শেষ পেরেকটা পুঁতে দিল। বিষয়টি আমরা অর্থমন্ত্রীকে জানাচ্ছি। উন্নত প্রযুক্তি আসুক, কিন্তু তার জন্য মানুষকে যেন মরতে না হয়।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement