Coronavirus

রেশন নিয়ে ক্ষোভে আগুন, আটক ডিলার

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ লকডাউনের সময় রেশনে বিনা পয়সার রেশনের দ্রব্য সামগ্রী রেশন কার্ড অনুপাতে বণ্টন করার কথা। সেই পরিমাণ দ্রব্য সামগ্রী ওই রেশন ডিলার দিচ্ছেন না।

Advertisement

কৌশিক সাহা

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২০ ০৩:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

রেশনের দ্রব্য সামগ্রী কম দেওয়ার অভিযোগ তুলে রেশন ডিলারের বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান মুর্শিদাবাদের ভরতপুর ২ ব্লকের পুনাশি গ্রামের বাসিন্দারা। ওই ডিলারের বাড়িতে ইট ছোড়া হয়েছে। বাড়ির সামনে আগুনও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অগ্নিকাণ্ডের জন্য দায়ি ওই রেশন ডিলারের পরিবারের লোকেরাই। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তাঁরাই বাড়ির জিনিসপত্র ও রেশনের কিছু নথি বাইরে এনে নিজেরাই আগুন জ্বালিয়ে দেন, এর সঙ্গে এলাকার লোকজনের কোনও সম্পর্ক নেই। শনিবার এই ঘটনার পরে অভিযুক্ত রেশন ডিলার হালিম শেখকে শো-কজ নোটিস দিয়ে তাঁকে সাসপেন্ড করে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে খাদ্য দফতর। হালিমকে আটকও করেছে সালার থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ লকডাউনের সময় রেশনে বিনা পয়সার রেশনের দ্রব্য সামগ্রী রেশন কার্ড অনুপাতে বণ্টন করার কথা। সেই পরিমাণ দ্রব্য সামগ্রী ওই রেশন ডিলার দিচ্ছেন না। অভিযোগ ওঠে, ওই ডিলার যাঁকে যেমন খুশি দ্রব্য সামগ্রী দিচ্ছিলেন। মাথা পিছু ৫০০ গ্রাম থেকে এক কেজি পর্যন্ত দ্রব্য সামগ্রী কম দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখিয়েই থেকে থাকেননি, ওই রেশন ডিলারের বাড়িতে ইট ছোড়া হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা আইনাল শেখ ও রফিক শেখরা জানান, ওই রেশন ডিলার জনরোষের শিকার হয়েছিলেন। ক্ষুব্ধ জনতা তাঁর বাড়িতে ইটও ছোড়ে। আইনাল বলেন, ‘‘তার পরে ওই ডিলার পরিবারের লোকজনই বাড়ি থেকে জিনিসপত্র বার করে এনে আগুন ধরিয়ে দেন। তাঁর পরিবারের লোকজন আগুন ধরিয়ে রেশনের বহু তথ্য পুড়িয়ে দিয়েছে।” রফিক বলেন, ‘‘ডিলারের পরিবারের লোকজন জিনিসপত্র, নথিতে আগুন ধরিয়ে তার পরে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু আগুন লাগানোর সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্কই নেই।’’ পড়ে সালার ও কান্দি থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

Advertisement

লকডাউনের প্রথম পর্যায়ে এপ্রিলেও রেশনে দ্রব্য সামগ্রী বিলি করার সময় ওই রেশন ডিলার সহ জেলার একাধিক রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ ওঠে। লকডাউনের দ্বিতীয় কিস্তির দ্রব্য সামগ্রী বিলি করার আগে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে রেশন ডিলারদের সঙ্গে তার পরে একাধিক বৈঠক করা হয়। কিন্তু তার পরেও শুক্রবার দ্বিতীয় কিস্তির দ্রব্য সামগ্রী বিলির সময় ওই রেশন ডিলার দ্রব্য সামগ্রী কম দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ।

স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে ভরতপুর ২ ব্লক প্রশাসনের কাছে রেশনের দ্রব্য সামগ্রী কম দেওয়ার অভিযোগ তোলেন। কিন্তু শনিবার সকালে ব্লক প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের কোনও হেলদোল না দেখে বাসিন্দারা ওই ডিলারের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। স্থানীয় বাসিন্দা রতন শেখ, নানু শেখরা জানান, ওই ডিলার শুধু লকডাউনের সময় রেশনের দ্রব্য সামগ্রী কম দিচ্ছেন এমন নয়, সারা বছর ধরেই গ্রাহকের প্রাপ্য দ্রব্য কম দেওয়া ওই ডিলারের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রেশন ডিলারদের সংগঠনের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক কৃষ্ণচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে সব ডিলারকেই জানানো হয়েছে, স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। কেউ যদি দুর্নীতি করেন, সংগঠন তাঁর পাশে থাকবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement