Coronavirus

শঙ্কিত অতি স্পর্শকাতর এলাকার দরিদ্রেরা

শনিবার রাতে মাইক নিয়ে প্রচার করা হয়েছে ওই এলাকায়। জানানো হয়েছে দু’টি হেল্পলাইন নম্বর।

Advertisement

সাগর হালদার

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৫৯
Share:

প্রতীকী ছবি

করোনা সংক্রমণের মোকাবিলায় লকডাউনের সময়সীমা ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সম্প্রসারিত হওয়ার পাশাপাশি বার্নিয়ার শ্রীকৃষ্ণপুর স্পর্শকাতর এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই সেখানে প্রশাসন কড়াকড়ি বাড়িয়েছে। ফলে ‘দিন আনি, দিন খাই’ পরিবারগুলি আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে। রুজিরোজগারের কী হবে, কী ভাবেই বা এর পর অন্নের সংস্থান করবেন , ভেবে পাচ্ছেন না অনেকেই।

Advertisement

শনিবার রাতে মাইক নিয়ে প্রচার করা হয়েছে ওই এলাকায়। জানানো হয়েছে দু’টি হেল্পলাইন নম্বর। তাতে ফোন করলেই জিনিসপত্র বাজার মূল্যে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে। এর জন্য বাড়ি থেকে বেরোনোর প্রয়োজন নেই। কিন্তু অনেক পরিবারেরই আর্থিক অবস্থা এমন যে, পেট চালানোর জিনিস কেনারই ক্ষমতা নেই। টেলিফোন নম্বর তাদের কোনও কাজে লাগছে না। তাদের দরকার অর্থ। টাকা দিয়ে জিনিস কেনার ক্ষমতা নেই। ওই পরিবারগুলির মতে, রোগ আটকাতে ঘরবন্দি থাকা উচিৎ কিন্তু টাকার অভাবে খেতে না পেয়ে বাড়ি বসে মৃত্যু কি কাম্য?

রবিবার ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে গোটা শ্রীকৃষ্ণপুর এলাকায়। এখানকার এক বাসিন্দা স্বপন সরকার হকারি করে সংসার চালাতেন। তিনি জানান, হেল্পলাইন নম্বরে যে কোনও জিনিস পেতে গেলে টাকা লাগবে। সেই টাকাই তাঁদের নেই। তা হলে তাঁদের মতো মানুষেরা ঘরবন্দি থেকে কি করে সংসার চালাবে? পেশায় ভ্যানচালক রামকৃষ্ণ মন্ডল জানান, টাকা তো বটেই, খেটে খাওয়া অনেক মানুষের কাছে এখনও মোবাইল ফোনই নেই। তাঁর কথায়, ‘‘প্রশাসন বোধহয় শুধু অর্থবানদের পরিষেবা দেওয়ার কথা ভাবছে। আমরা কী অবস্থায় আছি তারা কল্পনা করতে পারছে না।’’

Advertisement

তিনি জানান, লক ডাউনের বাজারে সকালের দিকে এলাকার চাষিদের আনাজ বাজারে পৌঁছে দিয়ে কিছু টাকা রোজগার হত। এখন এলাকা অতি স্পর্শ কাতর হওয়ার কারণে কোনও মানুষের বাইরে বের হওয়ার প্রশ্নই নেই। ফলে আর ভ্যান চালাতে পারবেন না। ঘরে এখন টাকাও নেই। দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষেরা জানান, হেল্পলাইন নাম্বারে ফোন করলে খাবার হয়তো পৌঁছে যাবে, কিন্তু টাকা দিয়ে কেনার উপায় তাঁদের নেই। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যারিকেড করার দিন অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহ ঠিকঠাক থাকলেও দুধ সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি ছিল। ইতিমধ্যেই দুধের ব্যাবস্থা করা গিয়েছে। বেশকিছু বাড়িতে পাঠানো হয়েছে দুধ। এলাকার দুঃস্থ মানুষদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। একেবারে যাঁরা দরিদ্র তাঁদের ব্লক প্রশাসনের তরফে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হবে। এমন যদি কেউ থাকেন যাঁর ফোন নেই, তিনি প্রতিবেশীর ফোনের সাহায্য নিতে পারেন, ব্লকের অন্তর্ভুক্ত ভিআরপি দল এবং আশা কর্মীরা তাঁর বাড়ি পর্যবেক্ষণ করার পাশাপাশি খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেবেন। এক প্রশাসনিক কর্তার কথায়, ‘‘এলাকার কেউ অভুক্ত থাকবেন না।’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement