Coronavirus

মাসুদুলের মুড়ির টিন একলা পড়ে

সাইকেল আর মুড়ির টিনটা নিয়ে বেরিয়েই মাসাদুল সকাল-সকাল পৌঁছে যেতেন ডোমকল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সামনে।

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২০ ০২:৪৬
Share:

লকডাউনের জেরে থেমে গিয়েছে মাসাদুলের সাইকেলের চাকা। আর সেই সঙ্গে থমকে গিয়েছে গোটা সংসারটা। নিজস্ব চিত্র

একটা সাইকেল, তার পিছনে বাঁধা মুড়ির টিন। সাইকেলের হ্যান্ডেলে ঝুলছে গোটা দুয়েক ব্যাগ। ডোমকল নতুন পাড়ার ফেরিওয়ালা মাসাদুল ইসলামের এই ছবিটাই ডোমকলের মানুষের চেনা। সকলেই জানেন এই সাইকেল আর মুড়ির টিনের উপরে ভর করেই কোনওক্রমে টেনেটুনে চলে মাসাদুলের চার জনের সংসার। কিন্তু লকডাউনের জেরে থেমে গিয়েছে মাসাদুলের সাইকেলের চাকা। আর সেই সঙ্গে থমকে গিয়েছে গোটা সংসারটা। কিভাবে এখন দু’বেলা দূরের কথা, এক বার মুখে ভাত উঠবে তা নিয়ে কপালে ভাঁজ পড়েছে মাসাদুলের।

Advertisement

সাইকেল আর মুড়ির টিনটা নিয়ে বেরিয়েই মাসাদুল সকাল-সকাল পৌঁছে যেতেন ডোমকল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সামনে। দিনের পর দিন চেনা রুটিনে, সেই হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়েই মুড়ি বিক্রি করে রোজগার পকেটে নিয়ে চাল-ডাল কিনে বাড়ি ফিরতেন সন্ধ্যাবেলা।

নিশ্চিন্ত থাকতেন মাসাদুল, পরের দিনের অন্ন নিয়ে। কিন্তু গত কয়েক দিনে তাঁর সেই মুড়ির টিনের মুখটা আর খোলা হয়নি, বের হতেই পারেননি বাড়ি থেকে হাসপাতালের পথে। ফলে তাঁর সাইকেলের চাকার মতোই জীবনের চাকাও যেন হঠাৎ থেমে গিয়েছে। প্রথমে দিন কয়েক এ দিক ও দিক করে চললেও আর সংসারটাকে টেনে নিয়ে যেতে পারছে না বছর পঁয়ত্রিশের মাসাদুল। এমনকি বাকি দিন কটা কিভাবে চলবে তাও স্পষ্ট নয়।

Advertisement

মাসাদুল বলছেন, ‘‘সারা দিন মুড়ি বিক্রি করে যে লাভের মুখ দেখি সেটা দিয়েই চাল-ডাল কিনে ঘরে ফিরি। আর বাকিটা দিই মুড়ি এবং মসলার দোকানে। এই নিয়মেই আমার বেঁচে থাকা। রাতে বাড়ি ফেরার সময়ে ছেলে দু’টোর জন্য ৫০ পয়সা দামের দু’টো লজেন্স আনতাম, সেটাও বন্ধ হয়ে গেল!’’ এর পরে পথ কোন দিকে যাবে, জানেন না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement