Coronavirus

জেলার সীমা পেরিয়ে নকল মদের রমরমা

স্থানীয় কয়েকটি সূত্রের দাবি, পাশের জেলাগুলি থেকে নদিয়ায় মদ সরবরাহ করা হচ্ছে।

Advertisement

মনিরুল শেখ

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৩৬
Share:

প্রতীকী ছবি

লকডাউনের জেরে দেশি ও বিলিতি মদের সরকার অনুমোদিত কাউন্টারগুলি বহু দিন ধরেই বন্ধ। কিন্তু নদিয়ার কল্যাণী থেকে কালীগঞ্জ পর্যন্ত মদের জোগান রয়েছে দিব্যি। মদ্যপায়ীদের অনেকেই নিয়মিত মদ পাচ্ছেন বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। মদের বৈধ কাউন্টারের মালিকেরা জানাচ্ছেন, দিন কুড়ি ধরে কাউন্টার বন্ধ থাকায় খোলা বাজারে মদ পাওয়া কোনও ভাবেই পাওয়া সম্ভব নয়। ফলে, যে মদ পাওয়া যাচ্ছে তা কতটা আসল, তা নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে।

Advertisement

স্থানীয় কয়েকটি সূত্রের দাবি, পাশের জেলাগুলি থেকে নদিয়ায় মদ সরবরাহ করা হচ্ছে। হরিণঘাটা থানার নিমতলার এক যুবকের দাবি, উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরের এক যুবক ফোনে অর্ডার নিয়ে মদের ‘হোম ডেলিভারি’ করছেন। তিনি দিন কয়েক আগে একটি দেশি মদের বোতল কিনেছিলেন। কাউন্টারে যার দাম ৭৫ টাকা, সেটাই গোপালনগর থেকে এসেছে ৩০০ টাকার বিনিময়ে। সেই মদ খেয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেই থেকে আর মদ খাচ্ছেন না।

নিমতলা থেকে শুরু করে কাষ্ঠডাঙা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের অনেকেরই দাবি, পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় হানা দিলেও মদ পুরোপুরি বন্ধ হচ্ছে না। এর ফলে যে কোনও সময়ে বড় বিপদ হতে পারে। লকডাউনের ফলে সবচেয়ে বেশি কালোবাজারি হচ্ছে মদের ক্ষেত্রে। দেশি মদ, রাম, হুইস্কি ও কম দামের বিয়ার এখনও দিব্যি বিক্রি হচ্ছে অন্তত তিন গুণ দামে। কোথাও কোথাও তা চার গুণেও পৌঁছে যাচ্ছে। কল্যাণীতেও মদ মিলছে পাশের জেলা হুগলি থেকে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, মাঝেরচরের এক যুবক রোজ ভোরে হুগলির কুন্তিঘাট থেকে তিন-চারটি হুইস্কির বোতল নিয়ে আসছেন। নদিয়ায় তা চার গুণ দরে বিক্রি হচ্ছে। ওই সব মদ কতটা আসল তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে যাঁরা কিনছেন তাঁদেরও।

Advertisement

লকডাউনের প্রথমের দিকেই কল্যাণীর এক মদ বিক্রেতা জানিয়েছিলেন, কাউন্টার থেকে কিনে আনা মদের স্টক শেষ। কিন্তু এখন তিনি দিব্যি মদ বিক্রি করছেন। নাকাশিপাড়া ও কালীগঞ্জেও পড়শি জেলা বর্ধমান থেকে জলপথে মদ আসছে বলে খবর। নাকাশিপাড়ার একটি বিলিতি মদের কাউন্টারের মালিক অংশুমান দে বলছেন, “এই সব মদ কতটা আসল, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। প্রচুর লাভের লোভে দেদার ভেজাল মদ বিক্রি করা হচ্ছে।“

আবগারি দফতরের তরফে ইতিমধ্যেই মাইকে প্রচার করা হয়েছে যে, যেখান সেখান থেকে পাওয়া মদ খেলে বিষক্রিয়ায় প্রাণ যেতে পারে। তবু দিব্যি চলছে ওই কারবার। অংশুমানের মতো বৈধ মদ বিক্রেতারাও চাইছেন, নিষেধাজ্ঞা উঠে গিয়ে আবার কাউন্টার থেকে মদ বিক্রি শুরু না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ ও আবগারি দফতর নকল মদের কারবার বন্ধে কড়া পদক্ষেপ করুক।

আদৌ কী কোনও পদক্ষেপ করছেন আবগারি কর্তারা? এ বিষয়ে জানতে সোমবার নদিয়া জেলা আবগারি দফতরের সুপার সৌরভ ভদ্রকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement