Coronavirus

 দুধের দাম পড়েছে, তবু ক্রেতা নেই  

শুক্রবার থেকে দু’বেলা দুধ নেব বললেও অনেক চাষির কাছ থেকে দু’বেলার দুধ নেওয়া হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২০ ০১:৩৮
Share:

প্রতীকী ছবি

গোপালকদের কথা ভেবে সম্প্রতি আংশিক সময়ের জন্য মিষ্টির দোকান খোলার ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্য সরকার। মুর্শিদাবাদের দুগ্ধ উৎপাদক সংস্থা ‘ভাগীরথী দুগ্ধ সমবায়ও’ শুক্রবার থেকে ফের দু’বেলা দুধ সংগ্রহ শুরু করেছে। এর পরেও স্বস্তিতে নেই নবাবের জেলার দুগ্ধচাষিরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, মিষ্টির দোকান খুললেও স্বাভাবিকের তুলনায় ৮০-৮৫ শতাংশ দুধ বা ছানা মিষ্টি ব্যবসায়ীরা নিচ্ছে না। যার ফলে ক্ষতি হচ্ছে। আবার ভাগীরথীও দু’বেলা নামকে ওয়াস্তে দুধ নিচ্ছে। যার ফলে চাষিদের স্থানীয়দের কাছে কম দামে দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে। দুগ্ধ চাষি থেকে শুরু করে মিষ্টি ব্যবসায়ীরা এবিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন।

Advertisement

তবে কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি অনুমোদিত মুর্শিদাবাদ জেলা দুগ্ধ উৎপাদক সংঘের যুগ্ম সম্পাদক পীযূষকান্তি ঘোষ বলেন, ‘‘ভাগীরথী একবেলা দুধ নেওয়া বন্ধ করায় চাষিদের চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। শুক্রবার থেকে দু’বেলা দুধ নেব বললেও অনেক চাষির কাছ থেকে দু’বেলার দুধ নেওয়া হয়নি। বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।’’

সম্প্রতি বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত মিষ্টি দোকান খোলার ছাড়পত্র দিয়েছে। এই অল্প সময়ের জন্য ছাড়পত্র মেলায় ১৫-২০ শতাংশ কাঁচামাল ব্যবহার করতে পারছে। পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্যের সহ-সভাপতি সাধন ঘোষ বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে ঘণ্টা চারেকের জন্য মিষ্টির দোকান খুলতে দেওয়ায় ১৫-২০ শতাংশ ছানার কাজ করা যাচ্ছে। ফলে দুধ চাষিদের ক্ষতি এখনও হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সকালের দিকে ঘণ্টা তিনেক ও বিকেলের দিকে ঘণ্টা তিনেক দোকান খোলার সুযোগ দিলে দুগ্ধচাষি ও মিষ্টি ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা কমত।’’

Advertisement

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে লকডাউন শুরু হওয়ায় গত ২৬ মার্চ থেকে ভাগীরথী দুগ্ধ প্রকল্প দু’বেলার পরিবর্তে চাষিদের কাছ থেকে একবেলা দুধ সংগ্রহ করছিল। সংস্থার কর্মকর্তারা দাবি করেন, শুক্রবার থেকে দু’বেলা দুধ সংগ্রহ করছে। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর ভাস্বর নন্দী বলেন, ‘‘রাজ্যের ১১টি জেলার পাশাপাশি পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডে এখানকার দুধ ও দুগ্ধজাত সামগ্রী যায়। কিন্তু বাজারে চাহিদা কমে যাওয়ায় একবেলা দুধ সংগ্রহ করা বন্ধ করা হয়েছিল। শুক্রবার থেকে ফের দু’বেলা দুধ নেওয়া শুরু হয়েছে।’’

সূত্রের খবর ভাগীরথী দুগ্ধ প্রকল্পে মার্চ মাসে দু’বেলায় ১ লক্ষ ১০ হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ করা হত। ২৬ মার্চ থেকে তা কমিয়ে একবেলায় ৬৫ হাজার লিটার করে দুধ নিত। ফের শুক্রবার থেকে দুবেলা করে দুধ নেওয়া হচ্ছে। দু’বেলায় ৮০ হাজার লিটার দুধ নেওয়া হচ্ছে। ভাগীরথীর ম্যানেজিং ডিরেক্টর বলেন, ‘‘আমাদের সংস্থার আওতায় প্রায় ৪০ হাজার কৃষক রয়েছে যাঁরা নিয়মিত দুধ দেন। একমাত্র যাঁরা আমাদের নিয়মিত দুধ দেন এই মুহুর্তে তাঁদের কাছ থেকে দু’বেলা দুধ নেওয়া হবে।’’

কান্দিতে ক্রেতার অভাবে ছানার দাম হয়েছে ৫০টাকা কেজি, চাঁচি ১০০টাকা কেজিতে বিকোচ্ছে, তুবও ক্রেতা নেই। ক্রেতা শূন্য বাজারে ব্যবসায়ীরা বসে আছেন। এক পক্ষকাল ধরে এমন ছবি কান্দি ছানা বাজারের। লকডাউনের কারণে ৪০ টাকা লিটার দুধ অর্ধেকে ঠেকেছে। ২০ টাকা লিটার দুধের দামে নেমে আসার পরেও ক্রেতা নেই। ফলে সমস্যায় বাসিন্দারা।

এদিকে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে গবাদি পশুদের খাবারের দাম।

কান্দির মানিক ঘোষের গোয়ালে মাত্র দশটি গরু। ওই দশটি গরুর খাবার জোগান দিতে দিনে প্রায় ১২ টাকা খরচ হয়। লকডাউনের প্রথম কয়েক দিন বাড়ির গোয়ালে রেখেই খাবারের জোগান দিয়েছিলেন মানিক। কিন্তু লকডাউন যত এগিয়ে যাচ্ছে ভয়াবহ হচ্ছে সাধারণ মানুষ থেকে গবাদি পশুদের খাবারের ব্যবস্থা করতে সমস্যা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement