—ফাইল চিত্র।
বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই জেলার রাস্তায় ভাঙা রাজ্য ও জাতীয় সড়কে গড়াল বেসরকারি বাস। বাস মালিকেরা অভিযোগ করেছিলেন, পেট্রল ডিজেলের দাম বৃদ্ধিতে বাস চালানোর খরচ বেড়ে গিয়েছে। তার উপরে যাত্রীও কম এবং রাজ্য ও জাতীয় সড়ক বেহাল দশার ফলে বাস রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বেড়ে গিয়েছে। বিভিন্ন রুটে বেআইনি গাড়ি চলাচলকেও দায়ি করা হয়েছিল। মুর্শিদাবাদ জেলা বাস মালিক সমিতি (রঘুনাথগঞ্জ) সম্পাদক মনিরুদ্দিন মণ্ডল বলেন, “ঝাড়খণ্ডের অটো, ম্যাজিক প্রভৃতি অবৈধ গাড়ি আমাদের বাস মালিকদের কোমর ভেঙে দিয়েছে। তার উপরে করোনা আবহে অল্পসংখ্যক যাত্রী নিয়ে ভর্তুকি দিয়ে গাড়ি চালানো এক প্রকার অসম্ভব হচ্ছিল বলেই বাস না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।” মুর্শিদাবাদ জেলা বাস ওনার্স কাউন্সিলের সম্পাদক তপন অধিকারী বলেন, “জেলা প্রশাসন আমাদের বিভিন্ন রুটে বেআইনি পরিবহণ চলাচল করবে না বলে আশ্বাস দেওয়ায় আমরা মালিক পক্ষ বাস পরিষেবা পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
তবে বুধবার রাতে জেলা প্রশাসনে সঙ্গে জেলা বাস মালিক সংগঠনের একপ্রস্থ বৈঠক হয়। প্রশাসন সূত্রে জানা যায় সেই বৈঠকেও বাস মালিকরা ভাড়া বৃদ্ধির কথাই বারবার বলেছিলেন। তবে সবশেষে অনড় প্রশাসনের কাছে হার মানতে বাধ্য মালিকপক্ষ বেআইনি গাড়ি প্রসঙ্গ তুলে প্রশাসনের উপর চাপ সৃষ্টি করেন বলে সূত্র মারফত জানা যায়। ওই বৈঠকে প্রশাসন সেই দাবি ভেবে দেখবার আশ্বাস দিলে বৃহস্পতিবার বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নেন বাস মালিকরা। জেলা পরিবহণ কর্তা সিদ্ধার্থ রায় বলেন, “বাস মালিকেরা লিখিত ভাবে কোন কোন রাস্তায় অবৈধ গাড়ি চলাচল করছে, সে কথা আমাদের জানিয়েছেন। আমরা সেই সমস্থ রুটে অবিলম্বে অবৈধ গাড়ি চলাচল বন্ধ করব।” বাস মালিক তপনবাবু বলেন, ‘‘ভাড়া বৃদ্ধি ও তেলের সেস কমানো রাজ্য স্তরের বিষয়। আমরা প্রশাসনের হাতে যে ক্ষমতা আছে সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে অনুরোধ করেছিলাম মাত্র। প্রশাসন আশ্বাস দেওয়ায় আমরা রাস্তায় বাস নামালাম।”
জুন মাসের শুরুতে সরকারি সিদ্ধান্তে বাস চলাচল শুরু হয়। কিন্তু যাত্রী সংখ্যা কম থাকায় জেলার বিভিন্ন রুটের প্রায় ছ’শো বাসের পরিবর্তে প্রথমদিকে একশো থেকে দেড়শোটি গাড়ি চলাচল করে। পরে বাসের সংখ্যা বেড়ে আড়াইশো থেকে তিনশো হয়। কিন্তু পেট্রল ডিজেলের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় ও যাত্রী সংখ্যা কম থাকায় জুন মাসের শেষদিন জেলার বাস মালিক সংগঠনগুলি বৈঠকে বসে বেসরকারি বাস না চালানোর হুমকি দিয়েছিলেন। সেই মতো চলতি মাসের প্রথমদিন বাস পরিষেবা বন্ধ থাকায় অচল হয়ে পড়েছিল। তবে বৃহস্পতিবার সকালে হাতে গোনা কয়েকটি বাস চলাচল করলেও প্রয়োজনের তুলনায় বাসের সংখ্যা কম থাকায় নাকাল হতে হয় যাত্রীদের।