কোটা থেকে ফেরা এক ছাত্রের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হচ্ছে বহরমপুরে। —নিজস্ব চিত্র
লকডাউনের মধ্যেই রাজস্থানের কোটা থেকে শুক্রবার গভীর রাতে জেলায় ফিরল ১৭২ জন পড়ুয়া। রাত সাড়ে দশটা থেকে ভোর সাড়ে তিনটে পর্যন্ত একে একে আটটি বাসে করে তারা আসানসোল থেকে বহরমপুর স্টেডিয়ামে ফেরেন। বাস থেকে নামিয়ে পড়ুয়াদের থার্মাল স্ক্রিনিঙের পর তাদের হাতে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা ১৪ দিনের কোয়রান্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। জেলা চিকিৎসা আধিকারিক (আয়ুশ) সুভাষ হালদার বলেন, “কারও করোনা উপসর্গ দেখা যায়নি। হোম কোয়রান্টিনে থাকার সময় কেউ অসুস্থবোধ করলে তাকে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে বলা হয়েছে।”
বেশ কিছু পড়ুয়ার সঙ্গে তাদের অভিভাবকরাও এ দিন ফেরেন কোটা থেকে। বহরমপুর থেকে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে তাঁদের পৌছানোর জন্য আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর থেকে ছোট বড় মিলিয়ে ১৩টি গাড়ির ব্যাবস্থা ছিল। যার মধ্যে বাস ছিল পাঁচটি। তবে রেজিনগর, বেলডাঙা, লালবাগ, জলঙ্গি, ইসলামপুর, ধুলিয়ান, শমসেরগঞ্জের পড়ুয়াদের জন্য বাসের সংখ্যা তুলনায় কম থাকায় পড়ুয়াদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা যায়। রাত সাড়ে দশটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত অনেক পড়ুয়া ও অভিভাবককে বহরমপুর স্টেডিয়ামে অপেক্ষা করতে হয়। ধুলিয়ানের বাসিন্দা সারওয়ার জামান বলেন, “বাড়ি থেকে গাড়ি নিয়ে গিয়ে ভাইকে বাড়িতে নিয়ে এসেছি।”
জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক সিদ্ধার্থ রায় বলেন, “নির্দিষ্ট সংখ্যক পড়ুয়ার সঙ্গে তাদের ব্যাগপত্র অনেক বেশি থাকায় বাসে জায়গা কম পড়ে। ফলে সবাই উঠতে পারেনি। পরে ছোট গাড়ি করে অনেককে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।” এই দীর্ঘ সময় পড়ুয়াদের জন্য কোন খাবারের ব্যবস্থা ছিল না বলেও ওই সমস্ত পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়। তবে সিদ্ধার্থবাবু বলেন, “আমরা বিস্কুট ও জল দিয়েছি অপেক্ষারত পড়ুয়াদের।”
শনিবার আলাদা ভাবে জেলায় ফিরলেন কোটার দুই পড়ুয়া ও এক অভিভাবক। ৩০ মার্চ কোটার জেলাশাসকের অনুমতি নিয়ে তারা ফিরতে শুরু করেছিল। ওই পড়ুয়াদের দাবি, বাংলা ও ঝাড়খন্ডের সীমানায় তারা আটকে ছিল। ঝাড়খণ্ডের চিরকুণ্ডা থানার অধীনে এক কোয়রান্টিন সেন্টারে ৩০ দিন আটকে থাকার পর বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরির বিশেষ অনুমতিক্রমে ঝাড়খণ্ড সরকার তাদের ছাড়পত্র দেয়।