coronavirus

মুম্বই সংযোগে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ  

লকডাউন পর্বে প্রায় পুরোপুরি নিরাপদ ছিল কল্যাণী শহর। শেষের দিকে বাজারহাট খোলার ব্যাপারে প্রশাসনও অনেকটা শিথিলতা দিয়েছিল। তা সত্ত্বেও শহরের কোনও বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত হননি। কিন্তু আনলক পর্বে পরিস্থিতিটা পাল্টে গিয়েছে।

Advertisement

মনিরুল শেখ

কল্যাণী শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২০ ০১:৪৮
Share:

ফাইল চিত্র

বহু দিন নিরাপদ থাকার পরে বহু এলাকাকে পিছনে ফেলে করোনা সংক্রমণের হারে ক্রমশ সামনের সারিতে চলে আসছে কল্যাণী শহর। এত দ্রুত এত বিক্ষিপ্ত ভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে যে তা রীতিমতো মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে নদিয়া জেলার কর্তাদের।

Advertisement

লকডাউন পর্বে প্রায় পুরোপুরি নিরাপদ ছিল কল্যাণী শহর। শেষের দিকে বাজারহাট খোলার ব্যাপারে প্রশাসনও অনেকটা শিথিলতা দিয়েছিল। তা সত্ত্বেও শহরের কোনও বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত হননি। কিন্তু আনলক পর্বে পরিস্থিতিটা পাল্টে গিয়েছে। গত কয়েক দিনে শহরের কেউ না কেউ আক্রান্ত হয়েই চলেছেন। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সংখ্যাটা ১৭ ছুঁয়েছে। কল্যাণী শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ছোট্ট জায়গা ভুট্টাবাজারেই শুধু আক্রান্ত হয়েছেন তিন জন। সেখানকার একটি পরিবারের সকলেই কর্মসূত্রে থাকতেন মুম্বইয়ে। তাঁরা সেখান থেকে ফেরার পরেই ওই পরিবারের এক মহিলা ও তাঁর এক বছরের সন্তানের লালারসের নমুনায় ভাইরাস মেলে। ওই পরিবারের সঙ্গে মুম্বইয়ে থাকতেন পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার এক বাসিন্দাও। বয়স বছর ষাটেক। কাটোয়ার বাড়িতে ফেরার আগে কয়েকটি থাকছিলেন তিনি। এরই মধ্যে তাঁর শরীরে সংক্রমণের লক্ষণ ফুটে ওঠে।

বি ১৭-এর বাসিন্দা, জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এক মহিলা চিকিৎসকেরও সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তিনি আপাতত কলকাতায় চিকিৎসাধীন। তাঁর স্বামী কলেজ শিক্ষক। শুক্রবার ওই শিক্ষক ও তাঁর ছেলেরও লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে। এখন পরিবারের সকলেই নিভৃতবাসে রয়েছেন। ওই শিক্ষকের অবশ্য এখনও পর্যন্ত কোনও উপসর্গ ধরা পড়েনি।

Advertisement

চাকদহ ব্লক অফিসের কর্মী, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দাও সংক্রমিত হয়েছেন। ওই অফিসে দুই গাড়ি চালকের করোনা ধরা পড়ে। তাঁদের সঙ্গেই পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের কর্মী কল্যাণীর ওই বাসিন্দাও আক্রান্ত হয়েছেন। শহরের ‘এ’ ব্লকেও সংক্রমণ হয়েছে এক জনের। দিন দুয়েক আগে জেএনএমের আরও এক নার্স এবং দুই চিকিৎসকও করোনায় আক্রান্ত হন। জেএনএম সূত্রের দাবি, মেডিসিন ওয়ার্ডের এক রোগীর থেকে ওই চার জন সংক্রমিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে।

কল্যাণী শহরের একাধিক জায়গায় করোনা ছড়িয়ে পড়া নিয়ে চিন্তা তো রয়েছেই, প্রশাসনের কর্তারা বিশেষ চিন্তিত ভুট্টাবাজার নিয়ে। কেননা সেখানকার যে পরিবারের একাধিক সদস্য করোনায় আক্রান্ত, তারা কিছু দিন একটি পুজো করেছিল। বহু লোক প্রসাদ খেয়েছিলেন। ওই পরিবারের এক জন আবার পাশেই পাহাড়িপাড়ায় একট বাড়িতে গিয়েছিলেন। তা নিয়ে ওই এলাকাতেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ভুট্টাবাজার মোড়েই থাকেন কাশীনাথ মাহাতো। তাঁর কথায়, “কল্যাণী পুর এলাকার অন্য এলাকার চেয়ে এই এলাকার জনঘনত্ব অনেকটাই বেশি। তাই ভয়ও বেশি।“ তার জেরে পাশের ফার্ম মোড়ের দোকানপাটও সে ভাবে খুলছে না।
কল্যাণী শহরের একাধিক এলাকা ইতিমধ্যে ‘কনটেনমেন্ট জ়োন’-এ পরিণত হয়েছে। তবে এই পরিস্থিতি গোষ্ঠী সংক্রমণের ঙ্গিতবাহী বলে মানতে নারাজ অনেকেই। কল্যাণীর পুরপ্রধান সুশীলকুমার তালুকদার যেমন বলেন, “ভিন্ রাজ্য বা হাসপাতালের সংযোগ রয়েছে, মূলত এমন লোকজনই কোভিড ১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে পুরসভা শহরের বিভিন্ন এলাকাকে জীবাণুমুক্ত করার দিকে নজর দিচ্ছে।“

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement