প্রতীকী ছবি।
বহরমপুরে করোনা সংক্রমণের বিরাম নেই। প্রায় প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা ২০ জনের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। যেখানে জেলার মোট করোনা আক্রান্তের প্রায় ২২ শতাংশ বহরমপুর শহর ও বহরমপুর ব্লকের বাসিন্দা, সেখানে বেপরোয়াভাবে ঘুরছেন বাসিন্দারা। শারীরিক দূরত্ববিধি ভেঙে অনেকেই বাজারে ভিড় জমাচ্ছেন, চায়ের দোকান থেকে মোড়ের মাথায় মাস্ক ছাড়াই শারীরিক দূরত্ববিধি ভেঙে আড্ডা মারছেন। তেমনই সোমবার বহরমপুরে খাগড়ায় ভৈরব মন্দিরে পুজো দিতে কয়েক হাজার মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে একটি বড় অংশ মহিলা ছিলেন। তেমনই মঙ্গলবার পুজোর ভোগ নিতেও কয়েক হাজার মানুষ সেখানে ভিড় জমিয়েছিলেন। দুর্গা পুজো, কালী পুজোর সময় সুরক্ষার যে তৎপরতা দেখা গিয়েছিল, তা ভৈরবের পুজোয় দেখা যায়নি।
অধিকাংশের মুখে মাস্ক থাকলেও শারীরিক দূরত্ববিধি শিকেয় উঠেছিল। যদিও খাগড়ার ভৈরবতলা ভৈরব পুজো কমিটির সভাপতি মানস চক্রবর্তী দাবি করেন, ‘‘প্রশাসনের নিয়ম মেনে, মানুষের আবেগকে আঘাত না দিয়ে করোনাকালে যেমন ভাবে পুজো করা উচিত তেমনই করা হয়েছে। পুজো দিতে আসা সকলের হাত স্যানিটাইজ় করা হয়েছে।’’ পুজো কমিটির কর্তারা জানান, মাস্ক ছাড়া কাউকে অঞ্জলি দিতে দেওয়া হয়নি। প্রতিবার অঞ্জলি দেওয়ার জন্য মন্দির চত্বরে ৩০জনের বেশি লোককে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সব কিছু নিয়ম মেনেই হয়েছে।
বহরমপুরে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা বসবাস করেন। আর সেখানেই করোনা সংক্রমণ বেড়ে চলায় স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় এপর্যন্ত ৯ হাজার ৩৮৭জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে বহরমপুর শহর, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বহরমপুর ব্লক। এপর্যন্ত বহরমপুর শহরে ১৩৫৭ জনের করোনা পজ়িটিভ হয়েছে। বহরমপুর ব্লকে ৭১ ৪জনের করোনা পজ়িটিভ হয়েছে। তৃতীয় স্থানে রয়েছে রঘুনাথগঞ্জ-১ ব্লক। সেখানে ৪৭০জনের করোনা পজ়িটিভ হয়েছে।
বহরমপুরে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে কেন? জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানান, বহরমপুর শহরের আয়তন প্রায় ৩১বর্গ কিলোমিটার। জনসংখ্যা প্রায় ২লক্ষ ২০হাজার। জেলার অন্য এলাকার তুলনায় এই শহরের জনঘনত্বও বেশি। জেলা সদর হওয়ার কারণে জেলার পাশাপাশি ভিন জেলার লোকজনও বহরমপুরমুখী হোন। শহরের খাগড়া, সৈদাবাদ-সহ যে কয়েকটি এলাকায় সংক্রমণ বেশি, সেদিকে বস্তি এলাকা হওয়া জনবসতি বেশি। ওই এলাকার অনেকেরই কর্মসূত্রে বাইরে যাতয়াত আছে। মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে মাস্ক পরা, শারীরিক দূরত্ববিধি মেনে চলা, নিয়মিত হাত স্যানিটাইজ় করার বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। তবে সংক্রমণ কমবে। আমরাও বাসিন্দাদের সচেতন করছি।’’