প্রতীকী ছবি
ফের করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলল মুর্শিদাবাদে। ভরতপুরের তিন জন ও ডোমকলের এক জনের করোনা পজ়িটিভ হয়েছে। তাঁদের সোমবার রাতে বহরমপুরে করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই নিয়ে মুর্শিদাবাদে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৩তে। তার মধ্যে আগেই কলকাতার হাসপাতালে ক্যানসার আক্রান্ত এক জনের কো-মর্বিডিটির কারণে মৃত্যু হয়েছে, এক জন কলকাতায় চিকিৎসাধীন এবং রবিবার সকালে নবগ্রামের করোনা আক্রান্ত এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। নবগ্রামের মৃত যুবকের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে তাঁর মৃত্যুর শংসাপত্র-সহ চিকিৎসার যাবতীয় নথি রাজ্যের ডেথ অডিট কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। ডেথ অডিট কমিটি পর্যালোচনা করে তাঁর মৃত্যুর কারণ জানালে স্বাস্থ্য দফতর মৃত্যুর কারণ ঘোষণা করবে। সূত্রের খবর, নবগ্রামের মৃত যুবকের মৃত্যুর শংসাপত্রে করোনা পজ়িটিভের পাশাপাশি শ্বাসকষ্টের, কিডনির রোগের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার শর্মিলা মল্লিক বলেন, ‘‘ইন্টারন্যাশনাল ক্লাসিফিকেশন অব ডিজিজ-১০ অনুযায়ী কোভিড আক্রান্তের মৃত্যু হলে শংসাপত্র লেখার যে নির্দেশিকা রয়েছে তা মেনেই লে হয়েছে।’’
করোনায় আক্রান্ত মৃত যুবকের দেহ রবিবার রাতে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পক্ষ থেকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেই রাতেই দেহ নবগ্রামের গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। মৃত যুবকের করোনা সংক্রমণ ছিল, দেহ গ্রামে পৌঁছনোর আগে এমন খবর পৌঁছতেই ফাঁকা হয়ে যায় চারপাশ। আত্মীয়স্বজন বা গ্রামের কাউকে মৃতের বাড়ি আশপাশে ঘেঁষতে দেখা যায়নি। সোমবারও গ্রামের কেউ তাঁর বাড়িমুখো হননি। সূত্রের খবর, রবিবার রাতে মৃতদেহ কবর দেওয়ার জন্য তাঁর বাবা ও মামাশ্বশুর উপস্থিত ছিলেন। কবর আলাদা লোকজনেও খুঁড়লেও বাকি সমস্ত কাজটাই করেছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা। সোমবার বিকেলে মৃতের মা আলিয়া বিবি বলেন, ‘‘বাড়ির কাছে একটু গাড়িটা দাঁড়িয়েছিল। ছেলেকে ছোঁয়া তো দূরের কথা, ছেলের মুখখানাও শেষবারের মতো দেখতে পেলাম না।’’
লকডাউনের তৃতীয় দফার শেষ দিক থেকে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে। দিন পনেরো আগে সুতি ও রঘুনাথগঞ্জের চার জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যায়। এর পরে একের পর এক করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলছে মুর্শিদাবাদে। রবিবার পর্যন্ত মুর্শিদাবাদে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৯ জন। সোমবার তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৩ জনে।
মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘জেলায় আরও চার জনের করোনা পজ়িটিভ হয়েছে। তাঁদের সোমবার রাতে বহরমপুরে করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সোমবার করোনা হাসপাতালে ৪১ জন করোনা রোগী ভর্তি রয়েছেন। ইতিমধ্যে ৯ জন সুস্থ হয়ে বহরমপুরের করোনা হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন।