ICDS

খাদ্যসামগ্রী জোটেনি চার মাস

জেলার একাধিক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা জানান, উপভোক্তারা কিংবা উপভোক্তাদের পরিবার থেকে ফোন করে জানতে চাওয়া হচ্ছে কবে চাল, ডাল দেওয়া হবে।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২১ ০৫:২২
Share:

প্রতীকী ছবি।

শেষবার জানুয়ারি মাসের খাদ্য সামগ্রী মিলেছিল মার্চ মাসে। তার পর থেকে গত চার মাসের খাদ্য সামগ্রী জোটেনি। যার জেরে সমস্যায় রয়েছেন মুর্শিদাবাদের সুসংহত শিশু বিকাশ কেন্দ্রের (আইসিডিএসে) উপভোক্তারা। ফলে আতান্তরে পড়েছেন মুর্শিদাবাদের প্রায় দশ লক্ষ ১২ হাজার শিশু ও গর্ভবতী মা। তাঁদের অধিকাংশই গরিব পরিবারের।

Advertisement

তাঁদের অভিযোগ, করোনার কারণে পরিবারের রোজগার এমনিতেই কমে গিয়েছে। তার পরে কড়া বিধিনিষেধ লাগু হওয়ায় পরিবারগুলির দশা আরও খারাপ হয়েছে। ফলে এই সময় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের চাল, আলু ও ডাল পেলে অনেকটাই উপকার হত।

তবে মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সিরাজ দানেশ্বর বলেন, ‘‘রাজ্য থেকে চাল, ডাল, আলু দেওয়ার নির্দেশ এলেই তা দেওয়া হবে।’’

Advertisement

জেলার একাধিক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা জানান, উপভোক্তারা কিংবা উপভোক্তাদের পরিবার থেকে ফোন করে জানতে চাওয়া হচ্ছে কবে চাল, ডাল দেওয়া হবে। তবে এখনও চাল, ডাল বরাদ্দ না হওয়ায় আমরা তাঁদের জানাতে পারছি না।

তাঁদের দাবি, যাঁরা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের আসেন তাঁদের সিংহভাগ গরিব পরিবারের। অনেকে অপুষ্টিতেও ভোগেন। ফলে করোনার কারণে গত বছর থেকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ থাকায় রান্না করা খাবারের পরিবর্তে প্রতি মাসে চাল, ডাল, আলু বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু করোনা কালে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চাল, ডাল, আলু বরাদ্দ অনিয়মিত হয়েছে। যার জেরে সমস্যা হচ্ছে। অনেকেই অপুষ্টিতে ভুগছেন বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে।
ডোমকলের এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী জানান, জানুয়ারি মাসের চাল, ডাল, আলু দেওয়া হয়েছে গত মার্চ মাসে।

কিন্তু জুন এসে গেলেও ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসের চাল, ডাল, আলু পেল না উপভোক্তারা। কবে সেই চাল ডাল জুটবে তাও ঠিক মতো জানাতে পারছেন না দফতরের কর্তারা।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, মাথা পিছু প্রতিমাসে দু’কেজি চাল, দু’কেজি আলু এবং ৩০০ গ্রাম মসুর ডাল দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী উপভোক্তাদের গত চার মাসের মাথা পিছু ৮ কেজি চাল, ৮ কেজি আলু ও ১২০০ গ্রাম করে মুসুর ডাল পাওয়ার কথা।

ডোমকলের একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের অভিভাবক টুম্পা খাতুন বলেন, ‘‘আমরা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দিদিদের কাছ প্রায় খোঁজ নিই কবে চাল আলু দেবে বলে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁরা জানাতে পারেননি কবে সে সব মিলবে।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলাজুড়ে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। সেই সব কেন্দ্রগুলিতে প্রায় ১০ লক্ষ ১২ হাজার উপভোক্তা রয়েছেন। সেই সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।

সূত্রের খবর, ৬ মাস থেকে তিন বছর বয়সি ৪ লক্ষ ২৫ হাজার, ৩-৬ব ছর বয়সি ৩লক্ষ ৮৭হাজার, গর্ভবতী ও প্রসূতি রয়েছে প্রায় ২লক্ষ। গত চার মাস ধরে তাঁরা খাদ্য সামগ্রী থেকে বঞ্চিত।

সূত্রের খবর, ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া ও রাজ্য সরকার যৌথভাবে এই প্রকল্পের খাদ্য সামগ্রী দেয়। আগের হারে খাদ্য সামগ্রী বরাদ্দ করলেও উপভোক্তা বেড়ে যাওয়ায় তা কুলাচ্ছিল না। যার জেরে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। তবে সম্প্রতি জেলায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের জন্য চাল, ঢুকতে শুরু করেছে। উপভোক্তারা শীঘ্রই খাদ্য সামগ্রী পেয়ে যাবেন বলে দফতরের আধিকারিকরা আশা প্রকাশ করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement