প্রতীকী ছবি।
করোনা সামলাতে আজ, শুক্রবার ফের লকডাউন রাজ্য জুড়ে। কিন্তু নদিয়ায় করোনার গতি সামাল দেওয়া যায় না, প্রবণতা ঊর্ধ্বমুখী। এর মধ্যে উপসর্গহীনদের সংখ্যা বেশি হলেও কোভিড হাসপাতালে ভর্তি থাকা আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার লক্ষণীয় রকম বেশি। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা পর্যন্ত সংখ্যাটা ৫২। তার আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৭২ জন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দু’টি কোভিড হাসপাতালে বর্তমানে দৈনিক সুস্থতা ও মৃত্যুর হার এক-চতুর্থাংশের কাছাকাছি। এ দিন সকাল ৭টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১৪ জন, মারা গিয়েছেন ৩ জন। প্রায় প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা দেড়শো বা তার আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। এ দিন তা এক লাফে হয়েছে ১৭২। এমন চলতে থাকলে অচিরেই দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা দুশো ছুঁয়ে যাবে বলে চলে যাবে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আশঙ্কা। কর্তারা বলছেন, জেলায় সংক্রমিতদের মধ্যে উপসর্গহীনদের সংখ্যা অনেকটাই বেশি, প্রায় ৯০ থেকে ৯২ শতাংশ। এঁদের কোভিড হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করার প্রয়োজন হচ্ছে না। বাড়িতে বা সেফ হোমে রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছে।
কিন্তু তার উল্টো দিকের ছবিটা? কারণ বর্তমানে কোভিড হাসপাতালে যত জন ভর্তি হচ্ছেন তাদের মধ্যে মৃত্যুর হার প্রায় চার জনের মধ্যে এক জন। তবে এর পরেও পারস্পরিক দূরত্ববিধি মানা দূরের কথা, মাস্কটুকুও পরতে অনেকের অনীহা প্রবল। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের মতে, ৯০ শতাংশই উপসর্গহীন হওয়ায় অনেকেরই করোনা নিয়ে ভয় কেটে গিয়েছে। কিন্তু ১০ শতাংশকে যে কোভিড হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে, সেই বিষয়টা আর মাথায় রাখছেন না তাঁরা।
বেশ কয়েক দিন ধরে নদিয়া জেলায় বেশ কয়েকটি পুরসভা ও ব্লক এলাকায় সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। চাকদহ ব্লক ও পুরসভা তার মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে। চাকদহ ব্লকে এখনও পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছেন ৪১৪ জন। মারা গিয়েছেন ৭ জন। চাকদহ পুরসভা এলাকায় এখনও পর্যন্ত সংক্রমিত ৩৮৮ জন। মারা গিয়েছেন ৪ জন। রানাঘাট পুরসভা এলাকায় ১৬৯ জন সংক্রমিত, মারা গিয়েছেন ৪ জন। রানাঘাট ২ ব্লকে সংক্রমিত ৩৪৬ জন, মারা গিয়েছেন ৪ জন। এর মধ্যে মৃত্যুর নিরিখে সবচেয়ে বাজে অবস্থায় আছে কৃষ্ণনগর শহর। ১৭৪ জন আক্রান্তের মধ্যে ৫ জন মারা গিয়েছেন। তবে কল্যাণী পুরসভা এলাকায় প্রথম থেকে ধারাবাহিক ভাবে সংক্রমিতের সংখ্যা বেশি থাকলেও এখনও পর্যন্ত এই শহরে কোনও মত্যু হয়নি।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, মৃতদের মধ্যে অন্য অসুখে ভোগা রোগীরাই সংখ্যায় প্রায় ৯৫ শতাংশ। কেউ কিডনি, কেউ ফুসফুস, কেউ হদপিন্ড, কেউ আবার উচ্চ রক্তচাপ ও ব্লাড সুগারের রোগে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন। বেশির ভাগেরই বয়স ৫০ বছরের বেশি। স্বাস্থ্যকর্তাদের পরামর্শ, বাড়ির বয়স্ক ও অসুস্থ মানুষদের জন্য সতর্কতা অবলম্বন করে চলা উচিত।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২)