ফাইল চিত্র।
জেলাসদরে আগেই এই বিপত্তি হয়েছে। এ বার রানাঘাট মহকুমাতেও প্রশাসনিক স্তরের আধিকারিকদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। মহকুমার দু’জন পুলিশ আধিকারিক ইতিমধ্যেই সংক্রমিত হয়েছেন, সম্প্রতি পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে মহকুমা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তারও। পাশাপাশি আক্রান্ত হয়েছেন দু’জন চিকিৎসক। এর মধ্যে এক মাত্র সুখবর, করোনা আক্রান্ত এক মহিলার সন্তান প্রসব হল কৃষ্ণনগর জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে।
দিন কয়েক আগেই রানাঘাট মহকুমার এক পদস্থ প্রশাসনিক কর্তার নমুনা পরীক্ষা করানো হয়। সেই সময়েই তাঁর রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। তবে কোনও উপসর্গ না থাকায় তাঁকে বাড়িতেই রাখা হয়েছে। রানাঘাটের উপ-সংশোধনাগারের এক আবাসিক সম্প্রতি জ্বরে ভুগছিলেন। তাঁরও লালারসের নমুনা নেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার তাঁর রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশোধনাগারে একটি আইসোলেশন ইউনিট তৈরি করে সেখানেই রাখা হয়েছে তাঁকে।
পুজোর আগেই শান্তিপুর থানার ওসি সুমন দাস করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। বর্তমানে অবশ্য তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাহেরপুর থানার এক আধিকারিক পুজোর মুখেই করোনা আক্রান্ত হন। তাঁর সামান্য কিছু সমস্যা রয়েছে। শান্তিপুরের বাসিন্দা এক চিকিৎসকের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট শুক্রবার পজ়িটিভ আসে। তিনি রানাঘাট পুরসভায় জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনে কর্মরত। তাঁর সামান্য কিছু শারীরিক সমস্যা থাকায় নমুনা পরীক্ষা করান। শুক্রবারই রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের এক চিকিৎসকের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। ভিন্ জেলার বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে তিনি রানাঘাটে ছিলেন। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শান্তিপুর শাখার এক কর্মী এবং তাঁর স্বামীও সংক্রমিত হয়েছেন। ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দা হলেও ওই কর্মী শান্তিপুরেই থাকেন।
রানাঘাট মহকুমা এলাকায় ইদানীং করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। রানাঘাট ২ ব্লকেই সংক্রমিতের সংখ্যা শনিবার সকাল পর্যন্ত ৭৮৫। রানাঘাট ১ ব্লকে ৫৫৭, শান্তিপুর ব্লকে ৩৮১, হাঁসখালি ব্লকে মোট ৫২৯ জন সংক্রমিত হয়েছেন। রানাঘাট শহরে সাড়ে চারশো এবং শান্তিপুর শহরে পাঁচশো পেরিয়ে গিয়েছে সংক্রমিতের সংখ্যা। তবে তুলনামূলক ছোট পুর এলাকা বীরনগর, তাহেরপুর, কুপার্সে সংক্রমিতের সংখ্যা অনেকটাই কম। কিন্তু সব মিলিয়ে রানাঘাট মহকুমা এলাকায় স্বাস্থ্য দফতর থেকে পুলিশ, সাধারণ প্রশাসনের আধিকারিক যাঁরা সামনের সারিতে থেকে কাজ করছেন, তাঁদের মধ্যেও সংক্রমিতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শুক্রবারই করোনা আক্রান্ত এক মহিলার সন্তান ভূমিষ্ঠ হয় কৃষ্ণনগরের জেলা সদর হাসপাতালে। তেহট্টের বাসিন্দা ওই মহিলার গত ১৯ অক্টোবর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। তিনি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। বৃহস্পতিবার তাঁকে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে তাঁকে সদর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। শুক্রবার সেখানেই আইসোলেশন ওয়ার্ডে তিনি একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।