ফাইল চিত্র।
জেলায় প্রথম করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছিল ১৮ এপ্রিল। পরের এক মাস প্রায় নিশ্চুপ থাকার পরে কোভিড ফের থাবা বসিয়েছিল মে মাসের মাঝামাঝি। জেলায় পরিয়াযীদের নিয়ে বাস-ট্রেনের ভিড় বাড়তে থাকার সঙ্গে সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বেড়েছিল সংক্রমণের ধাক্কা। বিশেষজ্ঞরা প্রচ্ছন্ন ভাবে জানিয়েছিলেন, ভিন রাজ্যে থেকেই জেলায় আসছে করোনা ভাইরাস। সেই সংখ্যা মঙ্গলবার গিয়ে দাঁড়াল, ৩৬১। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে মুর্শিদাবাদে ৮ জনের লালারস পরীক্ষার পরে কোভিড পজ়িটিভ এসেছে। বহরমপুর শহর, বহরমপুর ব্লক, নওদা, খড়গ্রাম, শমসেরগঞ্জ, ফরাক্কা এবং জঙ্গিপুর পুরসভা এলাকায় দু’জনের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে।
গত সপ্তাহে বহরমপুরের কাদাইয়ে এক ব্যক্তির করোনা পজ়িটিভ হয়। তিনি ডোমকলের এসিএমওএইচ অফিসের কর্মী। সোমবার রাতে তাঁর মেয়ের সক্রংণ ধরা পড়েছে। বহরমপুর ইন্দ্রপ্রস্থের এক তরুণের করোনা পজ়িটিভ হয়েছে। তাঁর পা ভেঙে গিয়েছিল দিন কয়েক আগে। প্রথমে তাকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের কথা বললেও তা না-শুনে তিনি স্থানীয় চিকিৎসকের চেম্বারে দেখান। ওই চিকিৎসক অন্য পরীক্ষার সঙ্গে করোনা পরীক্ষা করতে দেন। সেই রিপোর্টে দেখা যায় তিনি কোভিড পজ়িটিভ। পুলিশ ওই যুবকের বাড়ি এবং দোকান আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে। বহরমপুর বানজেটিয়ার এক বাসিন্দা ধুলিয়ানে এক বেসরকারি অফিসে চাকরি করতেন। সেখানেই বাড়ি ভাড়া করে থাকতেন। ওই বাড়ির অন্য দু’জন ভাড়াটে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরীক্ষা হয়েছিল তাঁরও। রিপোর্ট এসেছে পজ়িটিভ। তাঁকে মাতৃসদন করোনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘আক্রান্তের সংস্পর্শে আসার ফলে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। ফলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়েছে। তবে সুস্থ হওয়ার সংখ্যাও নেহাত কম নয়। প্রায় প্রতি দিনই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন যে সংখ্যক, তা দেখে ভরসা লাগছে তো বটেই। তাই এই রোগ নিয়ে আতঙ্কিত নয়, সতর্ক থাকতে হবে।’’ অভয় দিয়ে বহরমপুর মাতৃসদন করোনা হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পিনাকী রায় বলেন, ‘‘করোনা নিয়ে অযথা আতঙ্কিত হবেন না। করোনার থেকেও মৃত্যুর হার বেশি রয়েছে এমন রোগ আছে। ঘন ঘন হাত স্যানিটাইজ়ার দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। মাস্ক পরুন ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। সতর্কতা হিসেবে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, প্রেসার কিংবা কিডনির রোগে আক্রান্তেরা খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোবেন না।’’