প্রতীকী ছবি।
কোভিড হাসপাতালে ডিউটি করা নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে যে বিবাদ চলছিল তা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।
রবিবার থেকে ওই হাসপাতালে ডিউটি করার কথা ছিল কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালের চিকিৎসকেদের। জেলাশাসকের নির্দেশে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এই রস্টার তৈরি করেছিলেন। সেই রস্টার প্রথম থেকেই মানতে রাজি ছিলেন না জেএমএমের চিকিৎসকেরা। তাঁরা আদৌ রবিবার থেকে ডিউটি করবেন কিনা, তা নিয়ে সংশয়ও ছিল।
শনিবারই রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জেএমএমের অধ্যক্ষ জানিয়ে দিয়েছেন, এই মুহূর্তে তাঁদের হাসপাতালের চিকিৎসকেরা কোভিড হাসপাতালে পরিষেবা দিতে পারবেন না। রবিবার তাঁরা কেউ আসেননি। ফলে স্বাস্থ্য দফতরের আওতাধীন রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসককে ওখানে আপাতত কাজ চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে। তিনিই প্রথম থেকে সেখানে ডিউটিতে ছিলেন। স্বাস্থ্য দফতর ও স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে এই টানাপড়েনে অনিশ্চিয়তার মুখে পড়েছে কল্যাণীর কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা।
কোভিড হাসপাতালে পরিষেবার দায়িত্বে কারা থাকবেন তা নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে বেশ কয়েক দিন ধরে তুমুল গোলমাল চলছে। কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালটি স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত। জেলার অন্য সরকারি হাসপাতালগুলি রয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আওতায়।
জেলা জুড়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব ও তাঁদের অতিরিক্ত কাজের চাপের কথা বলে কোভিড হাসপাতালের জন্য জেএনএম কর্তৃপক্ষের কাছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের জন্য আবেদন করেছিলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। কিন্তু জেএনএম কর্তৃপক্ষ তা দিতে অস্বীকার করেন। তাঁরা জানান, তাঁদেরও প্রয়োজনের তুনলায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎক কম। দু’পক্ষের কেউ নিজের অবস্থান থেকে সরতে রাজি হননি।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা যখন রস্টার তৈরি করে ফেলেন তখন আবার জেএনএম কর্তৃপক্ষ প্রস্তাব দেন যে, কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতালে কোভিড হাসপাতাল স্থানান্তরিত করা হোক, আর সারি হাসপাতাল নিয়ে আসা হোক কল্যাণীতে। কোনও ভাবেই দু’পক্ষ সহমত হতে পারেননি।
কল্যাণীর কোভিড হাসপাতালের নোডাল অফিসার ছিলেন জেএনএমের মেডিক্যাল সুপার। আচমকা তাঁকে সরিয়ে অয়ন ঘোষ নামে এক চিকিৎসককে নোডাল অফিসার করে দেন জেএনএমের অধ্যক্ষ কেশব মুখোপাধ্যায়। যদিও এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। আর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “আমরা গোটা বিষয়টি স্বাস্থ্য ভবনকে জানিয়েছি। সেখান থেকে নির্দেশের অপেক্ষায় আছি।”