Coronavirus in West Bengal

ধুঁকে মরলেন কোভিড রোগী

অভিযোগ, সকলের চোখের সামনেই প্রায় ৪০ মিনিট ধুঁকে-ধুঁকে শেষ পর্যন্ত রোগীর মৃত্যু হয়।

Advertisement

মনিরুল শেখ

কল্যাণী শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২০ ০২:০৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

কোভিড হাসপাতালের ওয়ার্ডে প্রবল শ্বাসকষ্টে খাবি খাচ্ছেন রোগী। অথচ অভিযোগ, ওয়ার্ডে থাকা চিকিৎসক বা নার্সদের কেউ তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা দূরে থাক, তাঁর দিকে ফিরেও তাকাচ্ছেন না!

Advertisement

গত শনিবার কল্যাণী কোভিড হাসপাতালের ঘটনা। রোগীর অবস্থা সহ্য করতে না-পেরে ওই হাসপাতালের বিভিন্ন পরিষেবায় সাহায্য প্রদানকারী বেসরকারি সংস্থার এক অস্থায়ী কর্মী সেখানকার চিকিৎসক ও নার্সদের অনুরোধ করেন রোগীর চিকিৎসার জন্য। তাঁর অভিযোগ, এতে খেপে উঠে তাঁর সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেন মেডিক্যাল অফিসার ও নার্স।

অভিযোগ, সকলের চোখের সামনেই প্রায় ৪০ মিনিট ধুঁকে-ধুঁকে শেষ পর্যন্ত ওই রোগীর মৃত্যু হয়। তার পরই ঘটনার কথা ও নিজের অভিজ্ঞতা বিস্তারিত জানিয়ে নেটে একটি ভি়ডিও পোস্ট করেন কল্যাণী কার্নিভ্যাল কোভিড হাসপাতালে কর্মরত ওই মহিলা কর্মী। তাঁর সংস্থার তরফে এর পরই জেলা স্বাস্থ্য দফতরে কার্নিভাল হাসপাতাল সম্পর্কে একটি রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। তবে কোভিড হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠছে সর্বত্র, সব জেলায়। অভিযোগের ধরনও মোটামুটি এক। গুরুতর অসুস্থ রোগী ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়ার পর স্রেফ পড়ে থাকছেন। তাঁকে সেবা করা বা পরিষেবা দেওয়া দূরে থাক, চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীদের অধিকাংশ ধারেপাশে আসছেন না। যদি সেই রোগীর অবস্থা খুব খারাপ না-হয় তা হলে এমনিই কয়েক দিন থাকার পর তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন। কিন্তু যে ৫ শতাংশের অবস্থা খারাপ হচ্ছে বা কোনও রকম কো মর্বিডিটি আছে তাঁরা পড়ছেন চরম সমস্যায়। মৃত্যু ঘনিয়ে এলেও হাসপাতালে কার্যত কেউ তাঁদের বাঁচাতে এগিয়ে আসছেন না বলে অভিযোগ। কার্নিভাল হাসপাতালের কর্মী ও রোগীদের একাংশ জানাচ্ছেন, কেউ মারা যেতেই পারেন। কিন্তু তিনি হাসপাতালে ভর্তি থাকা সত্ত্বেও মৃত্যুর আগে চিকিৎসাটুকু কেন পাবেন না? কেন তাঁকে বাঁচানর শেষ চেষ্টা করবেন না চিকিৎসক ও নার্সরা? তা হলে কোভিড হাসপাতাল করে লাভ কী? কল্যাণীর চর জাজিরার এক বাসিন্দা কিছু দিন আগে ওই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।

Advertisement

তিনি বলছেন, ‘‘ওখানকার দুই-এক জন চিকিতসক সমস্যা করেন। তাতে গোটা হাসপাতালের নাম খারাপ হচ্ছে।’’ এর আগেও ওই হাসপাতালের অনিয়ম নিয়ে গয়েশপুরের এক বাসিন্দা ভিডিও করেন। তিনি তখন করোনা-আক্রান্ত হয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এখন সুস্থ হয়ে বাড়িতেই আছেন। তিনি বলছেন, ‘‘একটু জটিল সমস্যা নিয়ো রোগী গেলেই মুশকিল। তিনি আর চিকিৎসা পাবেন না।’’

এ ব্যাপারে ওই হাসপাতালের নোডাল অফিসার স্নেহপ্রিয় চৌধুরীকে বার-বার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। ফলে তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এ দিকে, রবিবার সকালে গ্লোকাল কোভিড হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। তাঁর বাড়ি হাঁসখালিতে। ৫ অগস্ট তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement