প্রতীকী ছবি।
জেলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। শনিবার জেলার করোনা-হাসপাতালে মারা গিয়েছিলেন দু’জন। এ দিন তাঁদের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরে জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, দু’জনেরই কোভিড পজ়িটিভ ছিল। করোনার সদ্য-শিকার ওই দুই ব্যক্তির প্রথম জনের বাড়ি ফরাক্কায়, অন্য জন অবশ্য পড়শি রাজ্য পাকুড়ের বাসিন্দা। অসুস্থ হয়ে তিনি ভর্তি ছিলেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের করোনা-হাসপাতালে। পাকুড় প্রশাসনকে তাঁর মৃত্যু সংবাদ পাঠানো হয়েছে। তবে তাঁদের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার সম্ভাবনা কম।
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিধি মেনেই তাঁদের সৎকার করা হবে। মৃতের তালিকা ধরলে মুর্শিদাবাদ জেলায় শনিবার দিনেই ১৫ জনের করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়ল। সংক্রমাতিদের মধ্যে শমসেরগঞ্জের অনুপনগর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এক কর্মী, শমসেরগঞ্জের এক সিভিক ভলান্টিয়ার রয়েছেন। আক্রান্ত ১৩ জনকে বহরমপুরে মাতৃসদন করোনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ পর্যন্ত মুর্শিদাবাদের পাঁচ জন করোনা আক্রান্তেরর মৃত্যু হয়েছে। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার শর্মিলা মল্লিক বলেন, ‘‘ফরাক্কার বৃদ্ধ ভর্তি হওয়ার কয়েক ঘণ্টা মধ্যেই মারা যান। একই ঘটনা, পাকুড়ের প্রৌঢ়ের, তাঁকে মাতৃসদনে ভর্তি করার কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা গিয়েছেন। চিকিৎসার কোনও সুযোগই পাওয়া যায়নি। লালারস পরীক্ষায় তাঁদের দু’জনের করোনা পজ়িটিভ এসেছে।’’ ক্রমাগত আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় জেলাজুড়ে চাপা আতঙ্ক ছড়িয়েছে। গত কয়েকদিনে গড়ে ১০ জনের করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়ছে।
শনিবার রাতে ফরাক্কায় করোনায় মৃত বৃদ্ধের বাড়ির আশপাশের এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। সতর্ক করা হয়েছে পড়শি গ্রামের লোকজনকেও। মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। করোনায় মৃত এবং আক্রান্তদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন তাঁদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। তবে একটা কথা জানিয়ে রাখি, করোনা নিয়ে সতর্ক থাকা যেমন জরুরি তেমনই অযথা ভয় পাওয়ারও কোনও কারণ নেই।’’
এক নজরে
• করোনা থেকে সুস্থ ২৫৬ জন।
• করোনা আক্রান্ত ৩৪৫ জন।
• করোনা হাসপাতালে ও বাড়িতে চিকিৎসাধীন ৮৫ জন।
• করোনায় মৃত্যু ছয় জনের।
(তথ্য সূত্র: স্বাস্থ্য দফতর)
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রের জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফরাক্কার আমতলার ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে মাতৃসদনে স্থানান্তরিত করা হয়। সে রাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। ভর্তি হওয়ার পরে তাঁর লালারস সংগ্রহ করা হয়েছিল। শনিবার সেই রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। ঝাড়খন্ডের পাকুড় জেলার চাঁদপুরের যে প্রৌঢ়কে শুক্রবার রাতে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে বহরমপুরে মাতৃসদনে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল, চিকিৎসার সুযোগ মেলেনি তাঁরও।