ফাইল চিত্র
নদিয়ায় একের পর এক সরকারি চিকিৎসক আক্রান্ত হচ্ছেন করোনায়।
সকালেই জানা গিয়েছিল, কৃষ্ণনগরের গ্লোকালে কোভিড হাসপাতাল তৈরির জন্য প্রথম থেকে সক্রিয় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের এক চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন। রাতে জানা গেল, জেলা হাসপাতালের এক শিশু বিশেষজ্ঞের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে যিনি এ দিন দুপুরেও হাসপাতালে গিয়ে নার্সিং স্টাফদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তাঁর কোনও উপসর্গ ছিল না, রুটিন মাফিক পরীক্ষা করা হয়েছিল।
শক্তিনগর জেলা হাসপাতালেরই মেডিসিনের আর এক তরুণ চিকিৎসক প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে বর্তমানে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাঁর করোনা ধরা পড়ার পরেই শক্তিনগরের আরও ছ’জন চিকিৎসকের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে, যার রিপোর্ট এখনও আসেনি। আক্রান্ত ওই তরুণ চিকিৎসকের স্ত্রী নিজেও জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক। বর্তমানে তিনি গ্লোকালের দায়িত্বপ্রাপ্ত নোডাল অফিসার। বৃহস্পতিবার তাঁর ছাড়াও চিকিৎসকের দুই মেয়ে ও বৃদ্ধ বাবা-মায়ের লালারস সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের সকলকেই রিপোর্ট না আসা প্রর্যন্ত গৃহ নিভৃতবাসে থাকতে বলা হয়েছে।
শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালেও আরও এক চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন। বুধবার রাতে চর্ম বিভাগের ওই চিকিৎসকের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। এই নিয়ে শান্তিপুর হাসপাতালের চার জন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হলেন। এ ভাবে একের পর এক চিকিৎসক আক্রান্ত হওয়ায় চিন্তার ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে জেলা কর্তাদের কপালে। সেই সঙ্গে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন অন্য চিকিৎসকেরাও। জেলা হাসপাতালে এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কথায়, “একটা বিষয় ক্রমশ পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে আমরা কেউই নিরাপদ নই। কখন যে কোথা থেকে আক্রান্ত হয়ে পড়ব, বুঝতেও পারব না।”
এর আগেও কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালের এক চিকিৎসক তথা কার্নিভাল কোভিড হাসপাতালের এক কর্তা আক্রান্ত হয়েছিলেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, কল্যাণীতে গিয়ে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে প্রসব সংক্রান্ত বিষয়ে বৈঠক করেছিলেন জেলা হাসপাতালের প্রসূতি বিশেষজ্ঞ। অনেকেই ধারণা, সেখান থেকেই সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন জেলা হাসপাতালের ওই চিকিৎসক। তার পরেই শক্তিনগরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আক্রান্ত চিকিৎসদের সংস্পর্শে আসা সকলেরই লালারস পরীক্ষা করা হবে।”