নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় অনড়। জঙ্গিপুরে। নিজস্ব চিত্র
জনতা কার্ফুর দিনেও নওদার পাটিকাবাড়ি শাহিনবাগের ধর্না মঞ্চে অবস্থান অব্যাহত। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, ‘করোনাভাইরাসে’র চেয়ে ভয়ঙ্কর ‘নয়া নাগরিকত্ব আইন’। পাটিকাবাড়ি শাহিনবাগ রবিবার ৪৮ দিনে পড়ল। যদিও এ দিন ধর্না মঞ্চে অবস্থানরত মানুষের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। উদ্যোক্তারা বলছেন, ‘‘করোনাভাইরাস নিয়েও আমরা সতর্ক। সবাইকে বলা হচ্ছে, যতটা সম্ভব ভিড় এড়াতে। তাই মঞ্চে ভিড় কম হয়েছে।’’ কিন্তু অবস্থান থেকে সরে আসতে নারাজ তাঁরা।
একই অবস্থা জঙ্গিপুর শহরে ওয়েলফেয়ার পার্টির এনআরসি বিরোধী ধর্না মঞ্চও। রবিবার ৫০ দিনে পড়ল এই ধর্না। এ দিন কয়েকশো মানুষ জমায়েত হন জঙ্গিপুর শহরের মহম্মদপুরে ধর্না মঞ্চের সামনে। করোনা পরিস্থিতির কারণে এই ধরনের জমায়েতে নিষেধ করা হয়েছে। সোমবার থেকে পুরশহরগুলি লকডাউনের আদেশও জারি হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে সব ধরনের জমায়েত এড়িয়ে চলছে সারা বিশ্ব। সেই কারণেই এ দিনের শতাধিক মানুষের জমায়েত দেখেই পুলিশ গিয়েছিল। আমিও গিয়েছিলাম। উদ্যোক্তারা সোমবার থেকে ধর্না তুলে নেওয়ার কথা দিয়েছেন।’’ ওয়েলফেয়ার পার্টির জঙ্গিপুরের সম্পাদক আবু তাহের আনসারি বলেন, “রবিবার ৫০ তম দিন ছিল ধর্নার। তাই ভিড় হয়। এই ধর্না মঞ্চ তুলে নেওয়া হবে না। সোমবার থেকে প্রতিদিন মঞ্চে ৭ থেকে ১০ জন করে উপস্থিত থাকবেন। যত দিন না সিএএ আইন বাতিল করা হচ্ছে ততদিন জঙ্গিপুরে দল ধর্না চালিয়ে যাবে।’’
পাটিকাবাড়িতে ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শাহিনবাগের আদলে তৈরি হয়েছে ধর্না মঞ্চ। যত দিন যাচ্ছে, তত ভিড় বাড়ছে পাটিকাবাড়ির শাহিনবাগে। সেখানে মাস্ক পরে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখছেন অবস্থানকারীরা। ধর্না মঞ্চে রয়েছে স্যানিটাইজ়ার। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কী করতে হবে, সে বিষয়ে ধর্না মঞ্চ থেকে প্রচার চালানো হচ্ছে। হাত ধোওয়ার কৌশলও শেখানো হচ্ছে ধর্না মঞ্চ থেকে। ধর্না মঞ্চের অন্যতম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘সিএএ-র বিরুদ্ধে ধর্না চলবে। পাশাপাশি করোনাভাইরাস নিয়েও এই মঞ্চ থেকে সচেতন করছি।’’
পাটিকাবাড়ির বাসিন্দা আবু তাহের মালিত্যা বলছেন, ‘‘করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হলে তার থেকে দুই বা তিন গুণ ব্যক্তি আক্রান্ত হবে। কিন্তু নয়া নাগরিকত্ব আইনের জন্য দেশের অধিকাংশ মানুষ ভুক্তভোগী হবেন। তা ছাড়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আমরা যেমন সতর্কতা অবলম্বন করছি, সিএএ-র বিরুদ্ধেও আমাদের একজোটে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।’’ যতদিন না এই আইন বাতিল হবে ততদিন এই আন্দোলন চলবে বলেও জানান তিনি।