ফাইল চিত্র।
রাঁধুনির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল মায়াপুর ইস্কনের গদাভবনে। শনিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ মায়াপুর ফাঁড়ির পুলিশ ওই রাঁধুনির দেহ উদ্ধার করে নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ সূত্রে খবর, রাঁধুনির নাম কমল ঘোষ (২৫)। তাঁর বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার বহাইলডাঙা গ্রামে। দীর্ঘ ন’বছর ধরে মায়াপুর ইস্কনে কর্মরত ছিলেন। ময়নাতদন্তের পর রবিবার সন্ধ্যায় কমলের দেহ তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যা করেছেন কমল।
ইস্কন সূত্রে খবর, রোজকার মতো শনিবারও রাত ৮টা পর্যন্ত রন্ধনশালায় কাজ করেছেন কমল। তবে শরীর খারাপের অজুহাত দেখিয়ে রাতের খাবার না খেয়ে ৯টা নাগাদ তিনি নিজের ঘরে চলে আসেন। অন্য আবাসিকরা খাওয়াদাওয়া শেষ ঘরে ঢুকে আলো জ্বালতেই কমলের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। তৎক্ষণাৎ খবর দেওয়া হয় ইস্কনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে মায়াপুর ফাঁড়ির পুলিশ। বর্ধমানে কমলের পরিবারকেও খবর দেওয়া হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস তিনেক আগে মন্তেশ্বরের পাশের গ্রামের এক বিধবা যুবতীর সঙ্গে কমলের বিয়ে হয়। যুবতীর প্রথম পক্ষের সাত বছরের এক পুত্র সন্তান থাকায় ওই বিয়ে নিয়ে পারিবারিক অশান্তি চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। অনুমান, ওই অশান্তির কারণেই মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন কমল। কমলের দাদু ধাত্রীগোপাল ঘোষ বলেন, ‘‘কমল দীর্ঘদিন ধরে ইস্কনে কাজ করে। অল্প দিন আগেই বিয়ে করেছিল। বিয়ের পর থেকে টুকটাক অশান্তি চলত বউয়ের সঙ্গে। তবে কেন গলায় দড়ি দিল, বুঝতে পারছি না।’’ ইসকনের জনসংযোগ আধিকারিক রসিক মহারাজ বলেন, ‘‘শুধু কমল নয়, ওঁর পরিবারের একাধিক সদস্য ইস্কনে কাজ করেন। দীর্ঘদিন ধরে ইসকনের সঙ্গে ওঁদের সম্পর্ক রয়েছে। অত্যন্ত পরিশ্রমী ও সৎ ছেলে। চাপা স্বভাবের হওয়ার জন্যই কাউকে সমস্যার কথা বলতে পারেনি।’’
তদন্তকারীরা জানান, মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যার সম্ভাবনা জোরালো হলেও অন্য দিকগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অত মানুষের মধ্যে এলাকায় কী ভাবে একজন আত্মঘাতী হলেন, সেই বিষয়টিও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।