গত ২৮ মে বেলডাঙায় পুরবোর্ড গঠন করেছে কংগ্রেস। কিন্তু, বোর্ড গঠনের প্রয়োজনে বিরোধী দলের এক কাউন্সিলরের ভোট নিয়ে চর্চায় দাঁড়ি পড়েনি এখনও। রাস্তার মোড় থেকে গৃহস্থের অন্দরমহল, বহু লোকের মুখে মুখে ফিরছে বোর্ড গঠনের রাজনীতি।
এ বারের পুরভোটে বেলডাঙায় কংগ্রেস ৭টি, বামেরা ৪টি ও বিজেপির ৩টি আসনে জয় পেয়েছে। ১৪ আসনের পুরসভার কারোরই একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা নেই। ত্রিশঙ্কু এই পুরসভায় শেষ হাসি হাসে কংগ্রেস। বিরোধী একটি ভোট কংগ্রেসের পক্ষে যাওয়ায় রাই পুরবোর্ডের দখল নেয়। জল্পনা বা চর্চার বিষয় এখনও সেই সেটাই। বিরোধী বাম বা বিজেপির কোন সদস্য কংগ্রেসকে বোর্ড গঠনের সুযোগ করে দিল?
পুরবোর্ড গঠনের দিনে যাঁরা সভাকক্ষে ছিলেন তাঁরা দেখেছেন আরএসপি-র টিকিটে জেতা ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মধুমিতা বিশ্বাস প্রকাশ্যে কংগ্রেসের কাউন্সিলরদের সঙ্গে বসে ভোট নিয়ে আলোচনা করছেন। ভোটদান শেষে তিনি বাম সদস্যদের থেকে আলাদা হয়ে যান। কংগ্রেসের তখন বিজয় উৎসব চলছে... ওই ঘটনার পরে আরএসপি-র দফতরে বিক্ষোভ দেখান দলীয় কর্মী, সমর্থক ও নেতৃত্বর একাংশ। দফায় দফায় বিক্ষোভ চলে গত শুক্রবার, শনিবারও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেলডাঙা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের এক বামকর্মী বলেন, ‘‘আমরা আরএসপি প্রার্থীকে জেতাতে দিনরাত এক করে খেটেছি। অনেক ভোটার আমাদের কথায় মধুমিতাকে ভোট দিয়েছেন। আর তিনি ভোটে জিতে কংগ্রেসকে বোর্ড গঠন করে দিলেন!’’ ক্ষোভের সঙ্গে অনেকেই জানাচ্ছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আর দল করবেন না। পুরোপুরি বসে যাবেন।
পরিস্থিতি দেখে ওই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে চলেছেন নেতৃত্ব। মধুমিতাই যে কংগ্রেসকে ভোট দিয়ে বোর্ড গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে, তা আরএসপি নেতৃত্বও মেনে নিচ্ছেন। দলের বেলডাঙা লোকাল কমিটির সম্পাদক মৃণাল সাহা বলেন, ‘‘আমরা নিশ্চিত হয়েছি মধুমিতাই ক্রস ভোটিংয়ে কংগ্রেসকে সমর্থন দিয়েছেন। এটা এলাকার ভোটার ও দলের সঙ্গে বেইমানি। দল তা সমর্থন করে না। দল তাঁকে বহিষ্কারই নয়, জনমত গড়ারও ডাক দেবে।’’
যাঁর বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ সেই মধুমিতাদেবী অবশ্য সবটাই কুৎসা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি শুধু বলেন, ‘‘এগুলো ঠিক নয়। এর বেশি কিছু বলব না।’’