অধীর চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।
বর্ষার বৃষ্টি মাঝে মধ্যে হচ্ছে। জেলা জুড়ে নিচু জায়গা, ডোবায় অল্প হলেও জল জমতে শুরু করেছে। ফলে মশার উপদ্রব বাড়ার সঙ্গে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে ডেঙ্গিও। জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত জেলায় চারশো জনের উপরে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। প্রায় প্রতিদিনই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনই মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে ডেঙ্গির তথ্য গোপনের অভিযোগ তুলেছেন বহরমপুরের সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তবে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বৃহস্পতিবার বহরমপুরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতর ডেঙ্গির তথ্য কোনও দিনই প্রকাশ করে না। দিল্লিতে স্বাস্থ্য দফতরে দরবার করেছি। তাঁরা বলে (রাজ্য) আমাদের তথ্য দেয় না। ডেঙ্গিতে কেউ মারা গেলে ডাক্তার লিখতে পারেন না যে, ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে।’’ অধীরের দাবি, ‘‘হৃদরোগে-সহ নানা কারণ দেখিয়ে ডাক্তারকে বলতে হবে ডেঙ্গিতে মৃত্যু নয়। যদি কোনও ডাক্তার ডেঙ্গিতে মৃত্যু বলেন তাঁকে সুন্দরবন বা দার্জিলিংয়ে বদলি হতে হবে। তাই ডাক্তার রিস্ক নেন না। ডেঙ্গি রোখার কেউ নেই।’’
তবে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ডেঙ্গি রুখতে তাঁরা তৎপর। ডেঙ্গি রুখতে প্রস্তুতি হিসেবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ বৈঠকে বসেন। জ্বরে আক্রান্তদের জন্য ২৪ ঘণ্টা রক্ত পরীক্ষা, জেলার অন্য হাসপাতালগুলি ফিভার ক্লিনিক খোলা সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয় বলে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপ সান্যাল ফোন ধরেননি, উত্তর দেননি এসএমএসেরও।
তবে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ অমিত কুমার দাঁ বলেন, ‘‘জেলায় এখনই ডেঙ্গির তেমন প্রাদুর্ভাব হয়নি। বর্তমানে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২১ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন। তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল।’’
তাঁর দাবি, ‘‘ডেঙ্গি মোকাবিলায় মেডিক্যাল কলেজ প্রস্তুত রয়েছে। ইতিমধ্যে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে ডেঙ্গির কথা মাথায় রেখে ‘ফিভার ক্লিনিক’ খোলা হয়েছে। রবিবার বাদে প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বেলা তিনটে পর্যন্ত ‘ফিভার ক্লিনিক’ খোলা থাকছে। এ ছাড়া, জরুরি বিভাগে তিন-চার দিনের জ্বরের রোগী এলে তাঁদের রক্ত পরীক্ষা করানো হচ্ছে। তার পরে প্রয়োজনে ভর্তি করা হচ্ছে। ফিভার ক্লিনিক পাঁচটা পর্যন্ত করা যায় কি না সেটাও দেখা হবে।’’