—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
প্রায় সপ্তাহ গড়াতে চলল। কিন্তু নবদ্বীপের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন প্রধানশিক্ষকের নিয়োগ ঘিরে জট এখনও অব্যাহত। মঙ্গলবারের পর শুক্রবার ফের নবদ্বীপের বকুলতলা ফিডার ইনস্টিটিউশনে প্রধানশিক্ষক হিসাবে সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কৌস্তভ সরকারকে স্কুলে যোগ দিতে দিলেন না অভিভাবকেরা। এই নিয়ে তিন তিনবার তিনি অভিভাবকদের বাধার মুখে ফিরে গেলেন।
যদিও যে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে নিয়ে অভিভাবক এবং পড়ুয়াদের আবেগ সেই গৌতম গড়াই শুক্রবারই প্রধানশিক্ষক হিসাবে যোগ দিয়েছেন শহরের দক্ষিণপ্রান্তে শ্রী গৌরাঙ্গ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বৃহস্পতিবার তিনি স্কুলের যাবতীয় ‘দায়িত্ব’ বুঝিয়ে দিয়ে গিয়েছেন স্কুলে তাঁরই এক সহশিক্ষিকা অনসূয়া মণ্ডলকে।
সকলের প্রিয় ‘গৌতম স্যার’কে শেষপর্যন্ত অন্য স্কুলে চলে যেতে হওয়ায় শুক্রবার অভিভাবকদের আন্দোলন আরও তীব্র আকার নেয়। এদিন সকাল ১০টার কিছু পর থেকেই অভিভাবকেরা ভিড় করতে শুরু করেন। বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ বকুলতলা ফিডার ইনস্টিটিউশনে প্রধানশিক্ষক হিসাবে যোগ দিতে আসেন কৌস্তভ সরকার। কিন্তু তাঁকে স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। স্কুলের সামনে রাস্তায় তিনি দাঁড়িয়ে থাকেন। অভিভাবকেরা তাঁর উদ্দেশে হাতজোড় করে বারবার বলতে থাকেন, ‘‘আপনার ওপর আমাদের কোনও রাগ নেই। কিন্তু আমরা আপনাকে এই স্কুলের প্রধানশিক্ষক হিসাবে মানতে পারব না। আমরা চাই গৌতম স্যার এই স্কুলে আসুন।’’ তাঁদের সাফ জবাব, যতক্ষণ না দাবি পূরণ করা হবে ততক্ষণ এই আন্দোলন চলবে। ডিআই বা এসআই এলেও তাঁদের একই কথা বলা হবে।
বেলা ১১টা নাগাদ ফিরতে হয় কৌস্তভ সরকারকে। তিনি বলেন, “আমি স্কুলে যোগ দিতে এসেছিলাম। কিন্তু আমায় যোগ দিতে দেওয়া হল না। তাই ফিরে যাচ্ছি। ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে সেই কথাই জানাব।” এই বিষয়ে প্রসঙ্গে নবদ্বীপ শহরচক্রের ভারপ্রাপ্ত অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক জানবাক্স শেখ বলেন। “ সমস্যা কদিন ধরেই চলছে। যে অভিভাবকেরা ওই প্রধানশিক্ষককে বিদ্যালয়ে যোগ দিতে দেননি তাঁদের সকলকে আমি কথা বলার জন্য আসতে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু ওঁরা কেউ আসেননি। আমি ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে সব জানিয়েছি। পরবর্তী পদক্ষেপ তাঁরা যেমন বলবেন সেইমত করা হবে।”
তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নবদ্বীপ চক্রের সভাপতি নিতাইচন্দ্র দাস বলেন, “ওই স্কুলে নতুন যিনি প্রধানশিক্ষক নিযুক্ত হয়েছেন তাঁকে সরকারি পদ্ধতি মেনে নিয়োগ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে তাঁকে কাজে যোগ দিতেই হবে। যে অভিভাবকেরা তাঁকে স্কুলে যোগ দিতে বাধা দিচ্ছেন তাঁরা আগে থেকেই ওঁর বিরুদ্ধে আপত্তি করছেন কী ভাবে? সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বলেছি।”