প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দুই তৃণমূল নেতার কাজিয়া চরমে উঠল সুতিতে। এক জনের বিরুদ্ধে উঠল দলে থেকে পেল্লাই বাড়ি বানানোর অভিযোগ। অন্য জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠল অকর্মণ্যতা ও নিষ্ক্রিয়তার।
সুতি ১ ব্লকের বংশবাটী পঞ্চায়েতের তৃণমূল সভাপতি প্রণবকুমার দাস সরাসরি এলাকায় দলেরই জেলা পরিষদ সদস্য অশেষ ঘোষকে ‘অকর্মণ্য’ বলে অভিযুক্ত করে ৫ বছরে এক বারের জন্য বংশবাটীতে গিয়ে কোনও কাজ না করার অভিযোগ তুলেছেন। অশেষ ঘোষ প্রণবের এই অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির পাল্টা অভিযোগ তুলে অবিলম্বে তা নিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছেন।
দুই নেতার এই কাজিয়ায় দল অস্বস্তিতে পড়েছে তাই নয়, জঙ্গিপুর জেলার তৃণমূলের সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, “নেতাদের মধ্যে এই ঝগড়া অবিলম্বে থামানো উচিত। কারণ রাজনীতিতে সৌজন্য আগে দরকার। প্রকাশ্যে এই আক্রমণ বন্ধ না করলে দলেরই ক্ষতি হবে।"বংশবাটী গ্রাম পঞ্চায়েতে রাস্তা ঘাটের অবস্থা খুবই বেহাল। এ নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে এই ক্ষোভে দলের ক্ষতি হতে পারে এমনটাই আশঙ্কা দলের নেতাদের। প্রণববাবু বলেন, “৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে প্রধান রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। পিচের রাস্তায় পিচ কবেই উঠে গেছে। পুরো রাস্তা খানা খন্দে ভরা। এটা জেলা পরিষদের রাস্তা। এলাকার জেলা পরিষদ সদস্য অশেষ ঘোষ ৫ বছরে একবারও আসেননি এলাকায়। বার বার বলা হয়েছে, কিন্তু কোনও কর্ণপাত করেননি। মানুষ এতে ক্ষুব্ধ।”
অশেষ অবশ্য বলেন, “প্রণব অন্যের শেখানো কথা বলেন। ভোটে জেতার পর ২০১৯ ও ২০২০ সালে বংশবাটীতে কর্মীদের নিয়ে আমি দলের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করেছি। দলের নিয়ম নীতি মেনে আমি দল করি।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমি জেলার প্রাক্তন যুব সভাপতিও। তাই জানি কী করে দলটা করতে হয়। অঞ্চল সভাপতিকেও মনে রাখতে হবে একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে কেমন করে মুখ খুলতে হয়।” অশেষের অভিযোগ, “যে রাস্তা নিয়ে বিতর্ক সেটা ৯ কিলোমিটার। প্রণবের বোঝা উচিত এটা জেলা পরিষদ করতে পারে না। আরআইডিএফ থেকে করার চেষ্টা হচ্ছে। বংশবাটি প্রতিষ্ঠিত মন্দিরের সামনে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা দিয়ে হাইমাস্ট লাইট দিয়েছি, দিন সাতেকের মধ্যেই তার কাজ শুরু হবে। পাশেই ৪ লক্ষ টাকা দিয়ে নিকাশি নালার কাজও শুরু হবে। ১৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি সোলার ওয়াটার সিস্টেম দেওয়া হয়েছে, যাতে এলাকার মানুষ পানীয় জল পায়। রাতুরিতে একটি রাস্তা দিয়েছি ২০ লক্ষ টাকার। সব কাজই শুরু হবে। আমি বলে দিচ্ছি, ২১ জুলাইয়ের পরে প্রণবের দলের অঞ্চল সভাপতির পদও থাকবে না।” পাল্টা উত্তর দিয়েছেন প্রণবও। তার কথায়, “আমি কোনও দুর্নীতি করি না। আমি ৯ বছর থেকে দলের অঞ্চল সভাপতি রয়েছি। আমার বাবা পুলিশে কাজ করতেন। দেড় বছর আগে মারা গেছেন।’’