TMC Conflict

হুমায়ুন কবীরকে ‘গদ্দার’ বললেন ব্লক সভাপতি, পাল্টা রাস্তায় ধরে ‘পেটানো’র হুঁশিয়ারি বিধায়কের

লোকসভা নির্বাচন মিটতেই ফের একবার মুর্শিদাবাদ জেলার ভরতপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

ভরতপুর শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২৪ ০১:০৯
Share:

তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। —ফাইল ছবি।

দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে অন্তর্ঘাত করেছেন খোদ বিধায়ক! লোকসভা নির্বাচন মিটতেই ফের একবার মুর্শিদাবাদ জেলার ভরতপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য। ভরতপুর-২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তথা মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ মুস্তাফিজুর রহমান অভিযোগ করলেন, ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর এ বারের লোকসভা নির্বাচনে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী ইউসুফ পাঠানের হয়ে ভোট না করে কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরীর হয়ে গোপনে ভোট করেছিলেন। হুমায়ুনের বিরুদ্ধে দলীয় তদন্ত দাবি করে তাঁর বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দাবি করেছেন মুস্তাফিজুর। পাল্টা ব্লক সভাপতি এবং তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গদেরকে বহরমপুরে রাস্তায় ধরে পেটানোর হুঁশিয়ারি হুমায়ুন কবীরের।

Advertisement

তৃণমূল ব্লক সভাপতি হুমায়ূনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, “লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে হুমায়ুন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে তৃণমূল প্রার্থী ইউসুফ পাঠানের জয়ের কৃতিত্ব একাই নিতে চাইছেন। কিন্তু হুমায়ুন নিজে তাঁর বিধানসভায় এলাকার ২৬২টি বুথের একটিতেও সক্রিয় ভাবে ইউসুফের হয়ে নির্বাচনী প্রচারে অংশগ্রহণ করেননি। তার ফলে জয়ের মার্জিন যা হওয়ার কথা ছিল তার থেকে অনেক কম হয়েছে।” তাঁর আরও অভিযোগ, “এ বারের লোকসভা নির্বাচনের সময় ইদের উৎসব থাকায় সংখ্যালঘু মানুষদের জন্য যে কাপড় বরাদ্দ করা হয়েছিল বিধায়ক সেই কাপড় কংগ্রেস সমর্থকদেরকে দিয়েছিলেন। এমনকি ত্রাণের জন্য বরাদ্দ ত্রিপলও তিনি কংগ্রেসের লোকজনকেই দিয়েছেন।”

তৃণমূল ব্লক সভাপতি আরও বলেন, “শক্তিপুরে যে বিতর্কিত মন্তব্য হুমায়ুন করেছিলেন তার জন্য সামাজিক ভারসাম্য নষ্ট হয়েছিল। আমাদের ধারণা এই কথা অধীর চৌধুরী, হুমায়ুনকে শিখিয়ে দিয়েছিলেন। অধীরবাবু ভেবেছিলেন, এর ফলে ভোট কাটাকাটির সুবিধা তিনি পাবেন। কিন্তু হুমায়ুন কবীর ওই ধরনের বিতর্কিত মন্তব্য না করলে ইউসুফ পাঠান আরও বেশি ভোট পেতেন।”

Advertisement

মুস্তাফিজুরের এই অভিযোগের প্রসঙ্গে হুমায়ুন বলেন, “এই ধরনের লোকেদেরকে আমি রাজনীতিতে পাগল-ছাগল বলে মনে করি। তাঁদের কথার জবাব দেওয়ার প্রয়োজন আমি মনে করি না। রাজ্যের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব জানেন মুর্শিদাবাদে হুমায়ুন কবীরের কী গ্রহণযোগ্যতা আছে। তাই নির্বাচনী প্রচারে মুর্শিদাবাদে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়ে গিয়েছিলেন।” তিনি আরও বলেন, “আগামী দিন আমি ভরতপুরে সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মসূচি করব এবং সেই কর্মসূচিতে যদি কোনও ব্লক সভাপতি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন তা হলে সেই ব্লক সভাপতি এবং তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গদেরকে বহরমপুরে রাস্তার উপর ধরে পেটাব।”

বিধায়ক ও ব্লক সভাপতি দ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান নিয়ামত শেখ বলেন, “কারও ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব দলীয় স্তরে আনা ঠিক নয়। দল সবটা নজর রাখছে। প্রয়োজনে শীর্ষ নেতৃত্বকে জানানো হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement