—ফাইল চিত্র।
বাঁশ-রড নিয়ে বাম নেতাকর্মীদের উপর চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
সোমবার বিকেলে দাদপুর বাজারে প্রতিবাদ সভা করছিল সিপিএম। সেই সময় যাচ্ছিল তৃণমূলের মিছিল। অভিযোগ, মিছিলে থাকা কয়েক জন ব্যক্তি রড-লাঠি দিয়ে বাম কর্মী-সমর্থকদের উপর চড়াও হয়। উল্টে দেওয়া হয় সভার চেয়ার, মাইক। ভাঙচুর করা হয় টোটোও। বাধা দিতে গিয়ে জখম হন বেশ কয়েক জন বাম সমর্থক। ওই ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে সিপিএম। রেজিনগর থানার ওসি সোমনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘সভায় হামলা চালানোর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
বামেদের দাবি, সরকারি প্রকল্পে যাঁরা বছর দুই আগে ঘর তৈরির টাকা পেয়েছেন, তাঁরাই ফের ঘর তৈরির টাকা পাচ্ছেন। অথচ নতুন কাউকে টাকা দেওয়া হচ্ছে না। অভিযোগ, তদন্ত শুরু হওয়ার পর তা জানাজানি হলে গত ২৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় দাদপুর গ্রামে স্থানীয় সিআইটিইউ ব্লক সম্পাদক তুঙ্গরাম তরফদারের বাড়িতে ও সিপিএমের দাদপুর শাখা সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ হালদার দোকানে গিয়ে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা তাঁদের নিগ্রহ করে। ধাক্কা মেরে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়। পুলিশের কাছে অভিযোগ জমা পড়ে। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ না করায় সোমবার বিকেলে দাদপুর বাজারে প্রতিবাদ সভার ডাক দেয় সিপিএম।
সভায় আমন্ত্রিত ছিলেন কংগ্রেসের নেতারাও। সেই সভায় বাম নেতা ও কর্মীদের আক্রমণের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বামেদের অভিযোগ, ওই দিন রাতে বাড়ি ফেরার সময় সিপিএমের রেজিনগর এরিয়া কমিটির সম্পাদক বদরুদ্দিন শেখকেও মারধর করে।
সিআইটিইউ ব্লক সম্পাদক তুঙ্গরাম তরফদার বলেন,‘‘দাদপুর ৩ নম্বর সংসদে পাঁচ জনকে দু’বার কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ঘরের টাকা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন বর্তমান পঞ্চায়েত সদস্যের বাবা। তিনি ২০১৫ সালে ৭০ হাজার টাকা ঘর তৈরির জন্য টাকা পান। ফের তাঁকে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। আমরা তার লিখিত প্রতিবাদ করেছি। তাতেই বাড়িতে এসে হামলা হয়।’’ তাঁর দাবি, তৃণমূলের লোকজন তাঁকে বেধড়ক মারধর করে। পুলিশকে তা লিখিত ভাবে জানালেও কোনও ফল হয়নি। তারই প্রতিবাদ সভা ছিল দাদপুর বাজারে। সেখানেও তৃণমূলের লোকজন চড়াও হয়।
যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলছে সিপিএম, তাঁদের একজন হলেন বেলডাঙা ২ পূর্ব তৃণমূলের কাযর্করী সভাপতি সুজিত দাস। তিনি বলেন, ‘‘তুঙ্গরামের স্ত্রী দাদপুরের প্রধান ছিলেন। তুঙ্গরাম নিজেও পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। নিজেরা যে কাজ করেছেন এখন সেই কাজের এখন তার বিরোধিতা করছেন। এলাকার গরিব মানুষ পাকা ঘর পাক সেটা তিনি চান না। তাই এইসব অভিযোগ তুলছেন।’’ তাঁর দাবি, সোমবার বাম ও কংগ্রেসের লোকজনই প্রথম ইট ছোড়ে। তাতে তিনি ও আরও দু’জন জখম হন। তার প্রতিবাদ করা হয়েছে মাত্র। বিডিও সমীররঞ্জন মান্না বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনও দুনীর্তির খোঁজ মেলেনি।’’