কৃষ্ণনগরে মুখ্যমন্ত্রী। নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। ছবি : সুদীপ ভট্টাচার্য।
বৃহস্পতিবার শান্তিপুরের প্রশাসনিক সভায় বিরোধী জনপ্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ না করার অভিযোগ উঠল। এমনকি যে শান্তিপুরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা হচ্ছে, সেই শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতিও ডাক পাননি বলে অভিযোগ।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভায় তাঁরা ডাক পান না বলে বার বারই অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। লোকসভা ভোটের আগে নদিয়া দক্ষিণের শান্তিপুরে বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক সভায় যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের শিলান্যাস, উদ্বোধনের পাশাপাশি উপভোক্তাদেরও বিভিন্ন ভাতা ও সহযোগিতা প্রদান করা হবে। শান্তিপুর শহরে পুরসভার স্টেডিয়ামে এই সভা হচ্ছে। তবে গ্রামীণ শান্তিপুরে শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির দখল রয়েছে বিজেপির হাতে। আর সেই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতি কেউই পাননি এই সভায়। শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বিজেপির চঞ্চল চক্রবর্তী বলেন, "সরকারি অর্থে প্রশাসনিক সভার নামে তো আদতে দলের সভা হয়। বিরোধী জনপ্রতিনিধিদের বাদ দেওয়াটা গণতন্ত্রের পরিপন্থী। জনপ্রতিনিধিদের এভাবে বাদ দিয়ে আসলে সেখানকার মানুষকেই অপমান করা হচ্ছে। তবে আমরা চাই প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিন, কালনা সেতুর দুর্নীতির বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।"
যদিও তৃণমূলের বিধায়ক থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিরা সভায় থাকছেন। শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী যেমন থাকছেন। তেমনই শান্তিপুর ব্লকের একটি অংশ পড়ছে রানাঘাট উত্তর পশ্চিম বিধানসভার মধ্যে। যার বিধায়ক খোদ বিজেপির জেলা সভাপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়। তিনিও প্রশাসনিক সভায় আমন্ত্রণ পাননি বলে অভিযোগ। পার্থসারথী বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী বিরোধী কণ্ঠ শুনতে চান না। বরং কন্ঠরোধ করতে চান। বিরোধী জনপ্রতিনিধিদের সেখানে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয় না। তবে শান্তিপুরে যখন আসছেন মুখ্যমন্ত্রী তখন বলে যান শান্তিপুর-কালনা সেতুতে যে আর্থিক নয়ছয় হয়েছে তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেবেন।" শান্তিপুর ব্লকের বাসিন্দা রানাঘাটের সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি জগন্নাথ সরকার অন্যবারের মতো এবারও আমন্ত্রণ পাননি বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী গণতন্ত্রের ধার ধারেন না। প্রশাসনিক সভায় কোনওদিনই বিরোধী জনপ্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয় না।"
নদিয়ার দক্ষিণে শান্তিপুর ছাড়া বাকি বিধানসভাগুলি রয়েছে বিজেপির হাতে। সেখানকার কোনও বিধায়ককেও আমন্ত্রণ করা হয়নি বলে অভিযোগ। জেলার মধ্যে একমাত্র তাহেরপুর পুরসভা রয়েছে সিপিএমের হাতে। অভিযোগ, সেখানকার পুরপ্রধানও ডাক পাননি। পুরপ্রধান উত্তমানন্দ দাস বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী তো সবার মুখ্যমন্ত্রী। এই সভায় থাকলে আমার এলাকার চাহিদা, উন্নয়নের কথা জানাতে পারতাম। কিন্তু আমরা বিরোধী বলে কি ব্রাত্য থেকে যাব।"
তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা জেলা পরিষদের পূর্ত ও পরিবহণ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "আমি বলব যাঁরা এ সব অভিযোগ তুলছেন তাঁরা আগে বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে মুখ খুলুন। তারপর না হয় এ সব বলবেন।" এই বিষয়ে ফোন করা হলে ধরেননি নদিয়ার জেলা শাসক।