কল্যাণী হাসপাতালে চলছে চিকিৎসা। — নিজস্ব চিত্র।
জেলা হাসপাতালে পেডিয়াট্রিক ভেন্টিলেটর রয়েছে, কিন্তু এত দিন পর্যন্ত কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজে (জেএনএম) কোনও পেডিয়াট্রিক ভেন্টিলেটর ছিল না। তা সত্বেও শ্বাসকষ্টে ভোগা শিশুদের জেলা হাসপাতাল থেকে জেএনএমে রেফার করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
জেলা হাসপাতাল হল স্বাস্থ্য দফতরের আওতাধীন, আর জেএনএম সরাসরি স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রয়েছে। অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণের আবহে শিশু রেফারকে কেন্দ্র করে দুই হাসপাতালের মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে উঠেছে।
জেএনএমে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশিতে ভোগা শিশুদের ভর্তির অস্বাভাবিক চাপ রয়েছে। সেখানকার কর্তৃপক্ষের দাবি, এমনিতে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল, চাকদহ স্টেট জেনারেল, রানাঘাট মহকুমা হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন হাসপাতাল থেকেও বিগত সপ্তাহগুলিতে অনেক রেফার কেস এসেছে। তবে তাঁরা সবচেয়ে অবাক হয়েছেন জেলা হাসপাতাল থেকে শিশু রেফার করা নিয়ে।
জেলা সদর হাসপাতাল থেকে বিগত সপ্তাহগুলিতে শনি ও রবিবার গড়ে প্রায় আট থেকে দশ জন করে শিশু রেফার হয়ে এসেছে বলে দাবি করেছেন জেএনএম কর্তকৃপক্ষ। তাদের কারও-কারও রেফারের প্রয়োজন ছিল না বলেও তাঁরা দাবি করেন। শুধুমাত্র কাগজে ‘রেফার’ লেখা থাকায় ভর্তি নিতে তাঁরা বাধ্য হয়েছেন বলে জানান।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য দফতর থেকে একটি নির্দেশিকা জারি হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন (এআরআই)যুক্ত শিশুকে হাসপাতালে রেফার করতে হলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে আগে শয্যা নিশ্চিত করতে হবে। জেএনএমের অধ্যক্ষ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের হাসপাতালে বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে রেফার হয়ে রোগী আসছে। কিন্তু আমরা এখনও কোনও শিশুকে রেফার করিনি।”
জেলা সদর হাসপাতালের পরিকাঠামো ভাল। তা হলে সেখান থেকে কেন শিশু রেফার হচ্ছে? জেলা সদর হাসপাতালের সুপার জয়ন্ত সরকার বলেন, “জেএনএম হাসপাতাল থেকে যদি এই তথ্য দিয়ে থাকে, সেটা ঠিক নয়। জেএনএম তো আমাদের কোনও অভিযোগ করেনি। গত এক সপ্তাহে জেএনএমে আট জন শিশু রেফার হয়েছে। তাদের মধ্যে দু’জনের শ্বাসকষ্ট ছিল। রেফারের প্রয়োজন ছিল না অথচ রেফার করা হয়েছে, এমন কোন চিকিৎসক বলেছেন যদি জানতে পারি তা হলে আমরা তাঁর সঙ্গে কথা বলব।”
বৃহস্পতিবারই জেএনএমের শিশু বিভাগে দেখা গেল চাপড়ার মুন্নি শেখ ও তাঁর সন্তানকে। কৃষ্ণনগর জেলা সদর হাসপাতাল থেকে মঙ্গলবার রাতে রেফার হয়ে সে এসেছে। শিশুর অক্সিজেন প্রয়োজন হয়নি। তার পরেও তাকে জেএনএমে রেফার করা হল কেন? মুন্নি শেখ দাবি করেন ‘‘ডাক্তারবাবুরা বললেন, এখানে এলে ভাল চিকিৎসা হবে।’’
জেএনএম সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার তাদের ৬৭ শয্যায় ৯৬ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। বুধবারই ভর্তি হয়েছে ৩১জন শিশু। অ্যাকিউট রিসপিরেটরি ইনফেকশন (এআরআই) নিয়ে ভর্তি রয়েছে ১৪ জন। তার মধ্যে চার জন বুধবার ভর্তি হয়েছে। আট জনের অক্সিজেন চলছে।