—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ভাগীরথীর বুকে জেগে ওঠা চর। আর সেই চরের জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে মাটি মাফিয়া, এমনই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদের আরও দাবি, মাটি কাটায় বাধা পেলে উল্টে স্থানীয়দের উপরেই চড়াও হচ্ছে ওই মাটি মাফিয়া।
বৃহস্পতিবার ভোর রাতে এই রকমই ট্রলারে করে এসে চরের মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দারা তা দেখতে পেয়ে বাধা দেন। এর পরই স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে ওই মাটি-চুরি করা মাফিয়ার ঝামেলা শুরু হয়। অভিযুক্ত মাটি মাফিয়া স্থানীয় বাসিন্দাদের হুমকিও দেয় বলে অভিযোগ। তবে গোটা ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত পুলিশ এবং প্রশাসনের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি।
শান্তিপুর ব্লকের হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চৌধুরীপাড়ার কাছে ভাগীরথী নদীর বুকে সম্প্রতি জেগে উঠেছে একটি চর। সেই চর ক্রমশ আয়তনে বৃদ্ধিও পাচ্ছে। নদীর ওপারে পূর্ব বর্ধমান। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সেই চরে ইতিমধ্যে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। পূর্ব বর্ধমান এবং নদিয়ার বাসিন্দাদের কেউ কেউ সেখানে চাষাবাদ করছেন। স্থানীয়দের দাবি, ইতিমধ্যেই সেখানে মাটি মাফিয়ার একাংশের আনাগোনা শুরু হয়েছে। রাতের অন্ধকারে ট্রলারে করে এসে তারা মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। নদীর বুকে সেই চরের ব্যক্তিগত মালিকানা অবশ্য নেই কারওরই। তবে সেখানে যেহেতু কেউ কেউ চাষাবাদ করছেন, তাঁদের চাষের জমির ক্ষতি যেমন হচ্ছে, পাশাপাশি চর থেকে অসাধু ব্যবসায়ীরা মাটি কেটে নিচ্ছে বলে অভিযোগ।
ওই ঘটনায় স্থানীয় হরিপুর পঞ্চায়েতের প্রধান চৌধুরীপাড়ার বাসিন্দা বীরেন মাহাতো বলেন, ‘‘নদীর বুকে একটি চর তৈরি হয়েছে। দুই পাড়ের বাসিন্দারাই সেখানে চাষাবাদ করছেন। কে বা কারা সেখান থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে, তা জানা নেই। বিষয়টি প্রশাসনকে জানাব।‘‘
হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা দিয়ে ভাগীরথীর পাড় থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ অবশ্য নতুন নয়। বেশ কয়েক বছর আগেও এই হরিপুর পঞ্চায়েতের মেথিডাঙা-সহ আশপাশের কয়েক জায়গায় ব্যাপক বাড়বাড়ন্ত হয়েছিল মাটি মাফিয়াদের। ভাগীরথীর পাড়ে সেই সময়ে চাষিদের চাষ করা জমির মাটিও ফসল-সমেত কেটে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। বাধা দিতে গেলে সেই সময়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে মাটি মাফিয়াদের ঝামেলা বাধে কয়েক বার। প্রশাসনের কাছে এই নিয়ে অভিযোগও জানিয়েছিলেন চাষিরা। সেই ঝামেলা অবশ্য থেমেছে। তবে নতুন করে এই চরকে ঘিরে আবার মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের।
শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী বলেন, ‘‘এই বিষয়টি নিয়ে আমায় এখনও পর্যন্ত কেউ কিছু জানায়নি। তবে সমস্যা নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।’’ আর শান্তিপুরের বিডিও সন্দীপ ঘোষ বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’