সিএমওএইচ-কে ঘিরে তুলকালাম। — নিজস্ব চিত্র।
সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসককে মেটাতে হবে রোগীর নার্সিংহোমের বিল। এই দাবিতে বৃহস্পতিবার তুলকালাম কাণ্ড ঘটল মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপ সান্যালকে নিগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছে রোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে। অবশেষে পুলিশি হস্তক্ষেপে শান্ত হয় পরিস্থিতি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত বহরমপুর থানার বুটারডাঙা এলাকার বাসিন্দা গোলবাহার শেখকে নিয়ে। তাঁর দাবি, কিছু দিন আগে পেটে ব্যথা নিয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, সেই সময় তাঁর অ্যাপেন্ডিক্সের অস্ত্রোপচার করেন ওই হাসপাতালের এক চিকিৎসক। গোলবাহার এবং তাঁর আত্মীয়-পরিজনদের দাবি, অস্ত্রোপচারের কিছু দিন পর পেটে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। তিনি বলেন, ‘‘সংক্রমণের পর ওই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো আমাকে ভর্তি করানো হয় বহরমপুরের একটি নার্সিংহোমে।’’ পরিবারের দাবি, সেখানে ফের তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়। গোলবাহারের অভিযোগ, ‘‘বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রায় ৩ লক্ষ টাকার বিল করেছিল। ওই টাকা দেওয়ার কথা দিয়েছিলেন সরকারি হাসপাতালের ওই চিকিৎসককে। কারণ ওঁর গাফিলতিতেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল। তাই চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্ত ব্যয়ভার নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। এখন বিল মেটাতে অস্বীকার করছেন ওই চিকিৎসক। আমরা কোথা থেকে ওই টাকা দেব?’’
সেই অভিযোগের নিষ্পত্তিতেই বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজে রোগীকে সঙ্গে নিয়ে জড়ো হন অনেকে। সঙ্গে ছিলেন হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়মত শেখ এবং মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি শামসুজ্জোহা বিশ্বাস (রাজু)। তাঁদের একাংশ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপের সঙ্গে কথা বলেন। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রোগীর সঙ্গে কথা বলতে নীচে নামলে বিধায়ক এবং সভাধিপতির সামনেই তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। শুরু হয় চরম বিশৃঙ্খলা। খবর দেওয়া হয় বহরমপুর থানায় বহরমপুর থানায়। পুলিশ গিয়ে আয়ত্তে আনে পরিস্থিতি। এ নিয়ে হকচকিত সন্দীপ বলেন, ‘‘রোগীর পরিবারের সঙ্গে যা হয়েছিল সহমর্মিতার সঙ্গে তার সমাধানের চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু একদল দুষ্কৃতী আজ যা ব্যবহার করল তা ক্ষমার অযোগ্য।’’
ঘটনায় দৃশ্যত বিব্রত হরিহরপাড়ার বিধায়ক। নিয়ামতের কথায়, ‘‘মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অত্যন্ত ভদ্রলোক। আমাদের সঙ্গে প্রথম থেকেই সহযোগিতা করছিলেন। কিন্তু রোগীর পরিবারের সদস্যরা যা করল তা ক্ষমার অযোগ্য। এটা ঘৃণ্য কাজ। এর তীব্র নিন্দা করছি।’’