বঙ্কিম ঘোষ, চাকদহের বিধায়ক। ছবি সৌমিত্র সিকদার।
ভোট পেরোতেই কল্যাণী এমসে নিয়োগ নিয়ে তদন্তে ফের তৎপর হয়ে উঠেছে সিআইডি। শুক্রবার কলকাতায় ভবানী ভবনে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে চাকদহের বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষকে। এর আগে হরিণঘাটার জাগুলির বাড়িতে এসে তাঁর বৌমা অনসূয়া ঘোষ ধরকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন সিআইডি অফিসারেরা। তবে অভিযোগের তালিকায় নাম থাকলেও রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি জগন্নাথ বিশ্বাস, বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য নেত্রী দীপা বিশ্বাস বা এমসের কোনও কর্তাকে তলব করা হয়নি।
বিধায়কের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর, ভোটের আগেই সিআইডি তাঁকে তলব করেছিল। বিধায়ক জানিয়ে দেন, তিনি নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত আছেন। ভোট মিটলে তবেই যাবেন। শুক্রবার সকালেই তিনি কলকাতায় ভবানী ভবনের উদ্দেশে রওনা দেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এমসে বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থায় নিয়োগ নিয়ে কল্যাণী থানায় দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। গত বছর ২০ মে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার বাসিন্দা সরিফুল ইসলাম ওই অভিযোগ করেন। দুই বিজেপি সাংসদ-সহ বেশ কয়েক জনের নামে প্রতারণা ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়। সেই তালিকায় বঙ্কিম, জগন্নাথ এবং দীপা ছাড়াও বাঁকুড়ার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার, বাঁকুড়ার বিধায়ক নিলাদ্রীশেখর দানা, তাঁর মেয়ে মৈত্রী দানা ও এমসের নির্বাহী অধিকর্তা রামজি সিংহ। দুই বিধায়ক নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে অনসূয়া এবং মৈত্রীকে এমসে ঠিকাদার সংস্থায় কাজ পাইয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ।
এ দিন দীপা বিশ্বাস বলেন, “সিআইডি-র তরফে আমার সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি।” একই কথা জানিয়ে জগন্নাথ দাবি করেন, “বঙ্কিমের পুত্রবধূ নিজের যোগ্যতাতেই চাকরি পেয়েছিলেন। এই প্রশ্ন ওঠায় চাকরি ছেড়়েও দিয়েছেন। তৃণমূল প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে।” বিজেপির চাকদহ বিধানসভা কেন্দ্রের আহ্বায়ক সুকুমার করঞ্জাইও দাবি করেন, “অকারণে আমাদের বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষকে হয়রান করা হচ্ছে। ওঁর বৌমার নিয়োগ ছিল চুক্তিভিক্তিক। এর সঙ্গে বিধায়কের কোনও যোগ নেই।”
তবে তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবাশীষ গঙ্গোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, “বিজেপি নেতারা এমস-কে মনে করেন তাঁদের দলের কেন্দ্রীয় সম্পত্তি। সেই জন্যই ওঁরা ওখানে ওঁদের ভাবনাচিন্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছেন। সেই বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে গিয়ে যদি কোথাও বিচ্যুতি ঘটে থাকে, সেটা আইনের চোখে ধরা পড়েছে। আইন আইনের মতো ব্যবস্থা নিচ্ছে।”