শিশুর মৃত্যুর পর কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা। বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে। নিজস্ব চিত্র
শেষ ২৪ ঘণ্টায় আরও চারটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ফলে ৪৮ ঘণ্টায় ১৪টি শিশুর মত্যু হল। শুক্রবার সন্ধ্যায় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ অমিত কুমার দাঁ বলেন, ‘‘রাজ্য থেকে পরিদর্শক দল এসেছে। তাঁরা শিশু বিভাগ, মহিলা বিভাগ ঘুরে দেখছেন। হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলছেন। আমরা তিন সদস্যর রিপোর্ট এ দিন পেয়েছি। তবে এ দিনই সেই রিপোর্ট প্রকাশ করছি না।’’
তাঁর দাবি, ‘‘এই মেডিক্যাল কলেজে ২৪ ঘণ্টায় ৪-৫ টি শিশু মৃত্যু স্বাভাবিক। কিন্তু ১০টি শিশু মৃত্যু অস্বাভাবিক। সে কারণে মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত যে ১০ জন মারা গিয়েছে তার তদন্ত হচ্ছে।’’
শুক্রবার দুপুরে বিজেপি নেতা রাহুল সিংহ এই হাসপাতালের শিশু বিভাগে ঘুরে দেখার পরে অধ্যক্ষর সঙ্গে দেখা করেন। তার পরেই তিনি ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন। চিকিৎসকদের সংগঠন মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টারের পক্ষ থেকে হাসপাতালের এমএসভিপি এবং অধ্যক্ষকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। শনিবার এপিডিআর প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে।
এদিন ডোমকলের নাসরিন খাতুনের ১৫ দিনের সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়েছে। নাসরিন সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, চার দিন আগে ডোমকল থেকে রেফার করেছিল। প্রথম দিন ছেলে হাত পা নেড়ে খেলাধুলো করেছে। এদিন মৃত্যু হয়েছে। এদিন ধুলিয়ান থেকে ৪৬দিনের শিশুর চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন মোশারফ শেখ। ১০ মিনিট দেরি হওয়ায় তাঁর শিশুকে ফিরিয়ে দিচ্ছিল বলে অভিযোগ। পরে কয়েকজন সাংবাদিকের চেষ্টায় তাঁর শিশুর এদিন চিকিৎসা করানো হয়েছে।
শুক্রবারও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ অমিত কুমার দাঁ বলেন, ‘‘আমরা প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি তিন জনের ওজন কম ছিল, দু’জনের জন্মগত ত্রুটি, এক জনের হৃদযন্ত্রের সমস্যা, এক জনের নিউরোলজিক্যাল সমস্যা, তিন জনের সেপসিস ছিল। এ ছাড়া বাকিদের ইনফেকশন হয়েছিল। চেষ্টা করেও তাদের বাঁচানো যায়নি। তিন জনের কমিটি পুরো ঘটনা তদন্ত করছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘১০ জন শিশুর মধ্যে তিন জনের এই হাসপাতালে জন্ম। বাকি সাত জন জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে রেফার হয়ে এসেছিল। ‘সোনালি সময়ে’র পরে পৌঁছনোর কারণে রক্ষা করা যায়নি বলে প্রাথমিক রিপোর্ট পেয়েছি।’’