child marriage

লকডাউনের পরিসরে নিশ্চুপে নাবালিকা বিয়ে

কন্যাশ্রী যোদ্ধারা গৃহবন্দি। সমাজকল্যাণ দফতরের যে কর্মীরা গ্রাম ঘুরে এ ব্যাপারে নজরদারি চালাতেন, তাঁদের গতিবিধিও থমকে গিয়েছে।

Advertisement

বিমান হাজরা

ফরাক্কা শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৩৬
Share:

প্রতীকী চিত্র

লকডাউনের স্তব্ধতায় নিঃসাড়ে নাবালিকা বিয়ে হয়েই চলেছে।
মুর্শিদাবাদের প্রান্তিক গ্রামাঞ্চলে লকডাউন যে নাবালিকা বিয়ের ক্ষেত্রে সুবর্ণ পরিসর তৈরি করেছে শুধু ফরাক্কা ব্লকের পরিসংখ্যানই সে কথা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।
কন্যাশ্রী যোদ্ধারা গৃহবন্দি। সমাজকল্যাণ দফতরের যে কর্মীরা গ্রাম ঘুরে এ ব্যাপারে নজরদারি চালাতেন, তাঁদের গতিবিধিও থমকে গিয়েছে। এই অবস্থায় নিশ্চুপে বিয়ের আসর বসছে প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে। সরকারি সূত্রে এমনই দাবি করা হয়েছে। যোগাযোগহীন অবস্থায় সেই সব নাবালিকা বিয়ের খবর পুলিশের কানে যখন পৌঁছচ্ছে ততক্ষণে বিয়ে কিংবা নিকাহ সাঙ্গ হয়ে গিয়েছে। কন্যা গিয়েছে শ্বশুরকুলে। অনেক বুঝিয়ে কখনও বা আইনের ভয় দেখিয়ে নাবালিকা মেয়েটিকে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে বটে তবে পুলিশ-প্রশাসন চোখের আড়াল হলেই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মুচলেকার তোয়াক্কা না করে তাদের ঠিকানা যে ফের পাল্টে যাচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য।
ফরাক্কা ব্লকে নাবালিকা বিয়ের পরিসংখ্যান সে কথাই বলছে। লকডাউনের সময়ে গত এপ্রিল থেকে অগস্টের গোড়ায় আনলক পর্বের প্রাক্কালে ওই ব্লকে ২৭টি বিয়ে বন্ধ করতে পেরেছে ব্লক প্রশাসন এবং কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। কিন্তু ওই পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট, এর বাইরেও কী বিপুল সংখ্যক নাবালিকার নিশ্চুপে বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা লকডাউনেও এ ব্যাপারে যতটা সম্ভব সমীক্ষা চালিয়েছে। দেখা গিয়েছে ফরাক্কা, ধুলিয়ান, সাগরদিঘি, আহিরন এলাকায় সত্তরটিরও বেশি নাবালিকা বিয়ের ঘটনা ঘটেছে। যা টেরও পায়নি স্থানীয় পুলিশ। ফরাক্কার এক দিকে ঝাড়খণ্ড, অন্য দিকে মালদহের বৈষ্ণবনগরের চর এলাকা। প্রায় অগম্য ওই সব এলাকায় বিয়ের আসর বললে তা আগাম খবর না পেলে রোখাও সম্ভব নয় পুলিশের। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষে রবিউল ইসলাম বলছেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীরা বাড়িতে। কন্যাশ্রী যোদ্ধাদের কাছে নেটওয়ার্ক বসে গিয়েছে। আগে নাবালিকা বিয়ে হলেই আগাম খবর পৌঁছে যেত। এখন সব বন্ধ। তার ফলে নিশ্চুপে বিয়ে হয়ে যাচ্ছে নাবালিকাদের।’’ একাধিক নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করেছেন ব্লক অফিসের কর্মী প্রদীপ দত্ত। তিনি বলছেন, ‘‘বহু গ্রামই প্রত্যন্ত অঞ্চলে। সেখানে কী হচ্ছে তা জানার উপায় প্রায় নেই। কিশোরীদের বিয়ে দেওয়ার সামাজিক প্রবণতা রয়েছে ওই সব গ্রামে। বোঝানোর পর তারা হয়ত বিয়ে থমকে দিয়েছেন। কিন্তু এখন পৌঁছতেই পারছি না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement