প্রসবের পরে শিশুর মৃত্যু, হল অভিযোগ

যে চিকিৎসকের কাছে টুম্পা সরকার নামে ওই মহিলা প্রসবের জন্য ভর্তি হয়েছিলেন সেই সুপ্রতিম মিত্র শুক্রবার সারা দিন ফোন ধরেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৫১
Share:

প্রতীকী ছবি।

আসন্নপ্রসবা লেবার রুমের শয্যায় শুয়ে প্রসবযন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন। তাঁর দাবি, গর্ভস্থ শিশুর মাথা বেশ কিছুটা বেরিয়ে আসা সত্ত্বেও চিকিৎসক বা লেবার রুমের নার্সরা শিশুকে পুরোপুরি বের করেননি। অভিযোগ, কয়েক জন নার্স এক হাজার টাকাও চান এবং গালাগাল করেন। ওই অবস্থায় মহিলাকে দীর্ঘক্ষণ ফেলে রাখা হয়। প্রসবের পরেই সেই শিশুর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রসূতির পরিবারের তরফে শুক্রবার জেলা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়।

Advertisement

যে চিকিৎসকের কাছে টুম্পা সরকার নামে ওই মহিলা প্রসবের জন্য ভর্তি হয়েছিলেন সেই সুপ্রতিম মিত্র শুক্রবার সারা দিন ফোন ধরেননি। আর হাসপাতালের সুপার শচীন্দ্রনাথ সরকার বলেছেন, “গুরুতর অভিযোগ। গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। একটি টিম তৈরি করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”

পারিবারিক সূত্রের খবর, ধুবুলিয়ার টিবি গেট এলাকার বাসিন্দা টুম্পা সরকারের প্রসব যন্ত্রণা শুরু হওয়ায় বুধবার ধুবুলিয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার তাঁকে জেলা সদর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। দুপুর সোওয়া একটা নাগাদ স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ সুপ্রতিম মিত্রর তত্ত্বাবধানে তিনি ভর্তি হন। রাত বারোটা নাগাদ টুম্পাদেবীর পরিবারকে জানানো হয় যে, সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়েছে।

Advertisement

টুম্পাদেবীর স্বামী কনক সরকার বলেন, “রাত তিনটে নাগাদ চিকিৎসক আমাদের বলেন যে, বাচ্চা পেটের ভিতরে পায়খানা খেয়ে মারা গিয়েছে! কিন্তু শুক্রবার সকালে আমি স্ত্রী-র সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, লেবার রুমে দীর্ঘ সময় বাচ্চার মাথা বের হয়ে ছিল। চিকিৎসক ও নার্সরা স্রেফ ফেলে রেখেছিলেন সময়মতো বাচ্চা প্রসব করানো হলে এমন হত না।”

তাঁর পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, টুম্পাকে যখন লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হয় তখন সেখানে অন্য এক মহিলার প্রসব চলছিল। টুম্পাকে দীর্ঘ ক্ষণ সেখানে ফেলে রাখা হয়। প্রথমিক তদন্তের পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শিশুর গলায় নাড়ি জড়িয়ে গিয়েছিল। স্বাভাবিক প্রসবে সমস্যা হচ্ছিল। পেটের ভিতরেই শিশুর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এমনকি সে পায়খানা খেয়ে ফেলে। এই অবস্থায় যখন তাকে পেট থেকে বের করা হয় তখনই তার অবস্থা সঙ্কটজনক ছিল। এসএনসিইউ-তে ভর্তি করেও তাকে বাঁচানো যায়নি।

চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, দীর্ঘ সময় প্রসব যন্ত্রণা চলতে থাকলে পেটের ভিতরেই শিশু পায়খানা খেয়ে নিতে পারে। ফলে প্রশ্ন উঠছে, কেন এত ক্ষণ প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে প্রসূতিকে থাকতে দেওয়া হল? শিশুর গলায় যদি নাড়ি জড়িয়ে গিয়ে থাকে তা হলে সময়মতো সিজার করা হল না কেন? কেন শিশু মাথা বের হওয়া অবস্থায় দীর্ঘ ক্ষণ রইল? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তদন্তে এই সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement