হাসপাতালে বিক্ষোভ রোগীর পরিবারের। —নিজস্ব চিত্র।
আবার চিকিৎসায় গাফিলতিতে শিশুমৃত্যুর অভিযোগ উঠল নদিয়ায়। এ বার ঘটনাস্থল কৃষ্ণনগরের শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল। শিশুমৃত্যুর ঘটনায় উত্তেজনা সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে। যদিও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ এবং পরিবার সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহের সোমবার একটি শিশুসন্তানের জন্ম দেন সুচিত্রা গোলদার নামে এক মহিলা। সদ্যোজাতের শ্বাসজনিত কিছু সমস্যা ছিল বলে জানান চিকিৎসকেরা। সে জন্য শিশুটিকে রাখা হয় এসএনসিইউ ওয়ার্ডে। মা চিকিৎসাধীন ছিলেন মহিলা বিভাগে। বৃহস্পতিবার প্রথম বার শিশুটিকে দেখতে যান মা। তাঁর অভিযোগ, পিঁপড়ে এবং পোকা ঘুরছিল শিশুর শরীরে। কেন শিশুর এই হাল তার জবাব দিতে পারেননি নার্সেরা। শুক্রবার সন্ধ্যায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। তার পর থেকে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে পরিবার।
মৃত শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সকাল থেকে শিশুটির অবস্থা খারাপ হলেও কোনও চিকিৎসক তাকে দেখেননি। বার বার অনুরোধ করলেও কর্ণপাত করেননি দায়িত্বে থাকা নার্সেরা। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ছিল শিশুটির। কিন্তু প্রয়োজনীয় ভেন্টিলেশন যন্ত্র না থাকা সত্ত্বেও অন্য হাসপাতালে ‘রেফার’ও করা হয়নি। শুধু তাই নয়, বিকেলে শিশুটির মৃত্যু হলেও সে খবর প্রথমে গোপন করা হয়েছে। পরিবারের চাপে পড়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ শিশুমৃত্যুর খবর প্রকাশ করে হাসপাতাল। শিশুর মা সুচিত্রা বলেন, ‘‘প্রথম থেকে শ্বাসকষ্ট থাকলেও সে ভাবে গুরুত্ব দেয়নি চিকিৎসকেরা। ভেন্টিলেশন প্রয়োজন জানা সত্ত্বেও ‘রেফার’ করা হয়নি। মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা পরে সেই খবর প্রকাশ করা হয়েছে। নার্সদের বার বার অনুরোধ করেও কর্ণপাত করেনি। আমরা পুলিশে অভিযোগ জানাচ্ছি।’’
অভিযোগ নিয়ে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে সুপার জয়ন্ত সরকার বলেন, ‘‘শিশুটির জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ দেওয়া হয়েছিল। বিশেষজ্ঞ কমিটির রেফারালের প্রোটোকল মেনে ‘রেফার’ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। জন্ম থেকে শিশুটির অবস্থা খারাপ ছিল। অবস্থার অবনতি হওয়ার পর স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়। যা যা প্রয়োজন ছিল, তার সব রকম পদক্ষেপই করা হয়েছিল। দুর্ভাগ্যবশত শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। গাফিলতির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’’