প্রতীকী ছবি।
দুই বছর আগে পুরসভার তরফে নির্দেশিকা দিয়ে শহরে ডিজে বক্স, শব্দবাজির ব্যবহার নিষিদ্ধ করার কথা ঘোষণা করে চাকদহ পুরসভা। এই পথে সাফল্যও এসেছে বলে দাবি। এখন শান্তিপুরেও দাবি উঠছে, চাকদহের পথে হেঁটে কড়া পদক্ষেপ করে শব্দ-দৈত্য দমন করা হোক।
শান্তিপুর শহর এবং আশপাশের গ্রামাঞ্চলে ডিজে বক্স এবং শব্দবাজির ব্যবহারের বিরুদ্ধে আগেই সরব হয়েছেন অনেকে। কিন্তু এখনও তা নিয়ন্ত্রণে আসেনি। গভীর রাত পর্যন্ত ডিজে বক্সের দাপট-ই শুধু নয়, সঙ্গে দাপাদাপি চলে মাইকের।
নদিয়া জেলারই চাকদহ পুরসভা সম্প্রতি কঠোর পদক্ষেপ করে ওই পুরসভা এলাকায় শব্দের তাণ্ডব বন্ধে উদ্যোগী হয়েছে। চাকদহে অনেক আগে থেকেই পরিবেশকর্মীরা এই ধরনের শব্দবিধি লঙ্ঘন করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-আন্দোলন করে আসছিলেন। চাকদহ প্রশাসন এবং পুরসভার কাছেও তাঁরা একাধিক বার দরবার করেছেন। ২০১৭ সালে পুরসভার তরফে তাঁদের বোর্ড মিটিং-এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় শহরাঞ্চলে ডিজে বক্স এবং শব্দবাজির ব্যবহার করা যাবে না। পরে তা প্রকাশ্যে মাইকিং করে ঘোষণা করা হয়। যদিও তা না মানলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কোনও ঘোষণা ওই নির্দেশিকায় ছিল না। এই ঘোষণার পাশাপাশি পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে নিয়মিত নজরদারির ব্যবস্থাও করা হয়। এতেই সাফল্য এসেছে বলে মনে করছেন চাকদহ এলাকার বাসিন্দারাও।
চাকদহের বাসিন্দা তথা পরিবেশ-কর্মী বিবর্তন ভট্টাচার্য বলেন, “চাকদহে আমরা অনেক আগেই শব্দদৈত্য বন্ধের জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলাম। পরে পুর-প্রশাসনের কঠোর মনোভাব এবং কড়া পদক্ষেপ করার কারণে এখানে ডিজে বক্স, শব্দবাজি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।”
চাকদহের পথ ধরে একই ভাবে প্রশাসন কড়া হাতে ডিজে বক্স, শব্দবাজির দূষণ দমন করুক, তা চাইছে শান্তিপুরের মানুষও। তবে শান্তিপুর পুরসভা মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধিতে আবেদনের পথেই হাঁটছে। পুরপ্রধান অজয় দে বলেন, “এ সব বন্ধ করতে পারে প্রশাসন। আমরাও আন্তরিক ভাবে চাই শব্দদূষণ বন্ধ হোক। কিন্তু এটা বন্ধ করার এক্তিয়ার আমাদের নেই। আমরা মানুষকে শব্দদূষণ নিয়ে সচেতন করছি। সঙ্গে আবেদন জানাচ্ছি যাতে তাঁরা এ সব ব্যবহার না করেন।”
প্রশ্ন উঠছে, শব্দদূষণ রোধে ডিজে বক্স, শব্দবাজির ব্যবহার বন্ধ করার এক্তিয়ার পুরসভার না থাকলে চাকদহ পারল কী ভাবে?
চাকদহের প্রাক্তন পুরপ্রধান দীপক চক্রবর্তী বলছেন, “আমরা তো নির্দেশিকা দিয়েছিলাম এ সব বন্ধ করার। পুর-এলাকার মধ্যে পুরসভা এটা করতেই পারে। শহরের মানুষের শান্তি যাতে বিঘ্নিত না হয়, সে দিকে তাকিয়েই এই সিদ্ধান্ত।”সে ক্ষেত্রে এলাকার মানুষের শান্তির কথা ভেবে শান্তিপুর পুরসভাও একই পথে হাঁটবে না কেন? শান্তিপুরের পুরপ্রধান অজয় দে-র জবাব, ‘‘আমরা আপাতত আবেদনের পথেই হাঁটছি।’’