তুষার কান্তি দাস। নিজস্ব চিত্র।
তিনি যে এক দিন অনেক উপরে যাবেন, তা তুষারকান্তি দাসের পরিজনেরা অনেক আগে থেকেই জানতেন। পড়াশোনায় ভাল তো বটেই, সেই সঙ্গে চোখ-কান খোলা। তিন ভাইই অবশ্য পড়াশোনায় ভাল। তুষারকান্তি মেজো। তিনিই ইসরোর বিজ্ঞানী। চন্দ্রযান ৩ অভিযানের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। বুধবার সকালে বাড়িতে একটা ফোন করে সেই যে তাঁর মোবাইল বন্ধ হয়েছে, আর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তিনি মনোনিবেশ করেছেন নিজের কাজে। তিনি যে সাফল্য পেয়েছেন, তা দেখা গিয়েছে সন্ধ্যায়। সারা দেশের মতো বেলডাঙার বড়ুয়া কলোনিতেও দাস বাড়িতে টিভিতে সকলে দেখেছেন, কেমন করে চাঁদ স্পর্শ করল ভারত। তুষারের দাদা কুমারকান্তি বলেন, ‘‘আমাদেরই ভাইয়েরও যে এই সাফল্যে অবদান রয়েছে, তা ভেবেই খুব আনন্দ হচ্ছে।’’ বৌদি বলেন, ‘‘ইচ্ছে করছে ওকে সামনে বসিয়ে ওর প্রিয় মাংস-ভাত রেঁধে খাওয়াই। কিন্তু কবে আসবে জানি না। সকালেই বলছিল, বিক্রম চাঁদে পৌঁছনোর পরে আরও অনেক কাজ রয়েছে। সে সবে ও জড়িত। তাই এখন ওকে বিরক্তও করতে চাই না। দেশের কাজে ও সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে যাক, এটাই চাই।’’
তুষারকান্তির ডাক নাম ছোটন। ছোটবেলায় পড়েছেন বেলডাঙার কাশিমবাজার রাজ গোবিন্দসুন্দরী বিদ্যাপীঠে। তার পরে গণিতে অনার্স নিয়ে বহরমপুরের কৃষ্ণনাথ কলেজে পড়ে এমএস সি করেন আইআইটি খড়্গপুরে, এমটেক আইএসএম ধানবাদ থেকে। ২০০৫ সালে ইসরো-তে যোগ। প্রথমে বেঙ্গালুরুতে সায়েন্টিস্ট ইঞ্জিনিয়ার তার পরে এখন তিরুঅনন্তপুরমে। চন্দ্রযান-৩ প্রকল্পে যুক্ত বিজ্ঞানী তিনি। তাঁর বন্ধু অরিন্দম ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘ছোটন অল্প বয়স থেকেই খুব পড়ুয়া ছেলে। ও আস্তে আস্তে অনেক দূর গেল, এখন তো চাঁদও ছুঁয়ে ফেলল। কিন্তু মাটির ছোঁয়া কোনওদিন ভোলেনি।’’