ইতি সরকার। নিজস্ব চিত্র।
বিধায়কের পর নিয়োগ-দুর্নীতির মামলায় তাঁর ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করল সিবিআই।
সপ্তাহখানেক আগেই তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সূত্রের খবর, তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করেন তদন্তকারীরা। তাপস-ঘনিষ্ঠতার সুবাদে ধৃত প্রবীর কয়াল, তাঁঁর শ্বশুর ও শ্যালকের গলার স্বরের নমুনাও সম্প্রতি সংগ্রহ করা হয়েছিল।
এর পরেই একদা তাপস-ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেত্রী ইতি সরকারকে তলব করে সিবিআই। শুক্রবার তদন্তকারীদের মুখোমুখি হয়েছেন ইতি। এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ নিজ়াম প্যালেসে ঢোকেন ইতি। দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তদন্তকারীদের দাবি, তাপসকে কেন্দ্র করে অযোগ্য প্রার্থীদের বাঁকা পথে টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার একটি চক্র তৈরি হয়েছিল। তাতে প্রবীর-সহ বিধায়কের ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতানেত্রী জড়িত ছিল। ইতির ক্ষেত্রে তেমন অনেক সূত্র পাওয়া গিয়েছে।
নদিয়ার তেহট্ট ১ ব্লক মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী ইতির বাড়িতে আগেই অভিযান চালিয়েছিল সিবিআই। গত বছর ২১ এপ্রিল তেহট্টে তাপসের বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিবিআই। পরের দিন সেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতুল্লানগরে ইতি সরকারের বাড়িতেও অভিযান চালায় তারা। ইতির দাবি, সে দিন সিবিআই তাঁর বাড়ি থেকে একটি ডায়েরি নিুয়ে গিয়েছিল। সেটি নিয়ে কথা বলতেই এ দিন তাঁকে ডাকা হয়। গত ২১ জুন তাপসকেও ফের নিজ়াম প্যালেসে তলব করেছিল সিবিআই। ইতির তলব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সেই দিনই নাকি সিবিআই ইতিকে যেতে বলে চিঠি দিয়েছিল। তবে ও কোন চিঠি পায়নি। ফোনে গতকাল সিবিআই ওর সঙ্গে যোগাযোগ করে। আমাকে যে কারণে ডাকা হয়েছিল, সেই ঘটনার তদন্তেই ইতিকে ডেকেছে।”
তদন্তকারীদের দাবি, ইতি প্রবীরেরও ঘনিষ্ঠ ছিলেন। নদিয়া জেলার বিভিন্ন স্কুলে তাঁর যোগাযোগ ছিল। ইতির পোশাকের ব্যবসা রয়েছে। বিভিন্ন স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের ইউনিফর্ম সরবরাহ করতেন ইতি। সিবিআই সূত্রের দাবি, এ ছাড়া নিয়োগ দুর্নীতির ক্ষেত্রেও ইতির বিরুদ্ধে বেশ কিছু নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তাপস ও প্রবীরের বয়ানের ভিত্তিতে ইতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে ইতির দাবি, তিনি কোনও দুর্নীতির সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তিনি তদন্তে সহযোগিতা করছেন।