সুজলের বিএড কলেজে ঢুকছেন সিবিআই আধিকারিকরা। — নিজস্ব চিত্র।
মুর্শিদাবাদেও চলছে সিবিআইয়ের তল্লাশি অভিযান। ডোমকলের তৃণমূল বিধায়ক জাফিকুল ইসলামের বাড়ির পাশাপাশি সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা পৌঁছে গিয়েছিলেন বড়ঞার কুলির বাসিন্দা পেশায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়ী সুজল আনসারির বাড়ি এবং বিএড কলেজে। সিবিআই সূত্রে খবর, সুজলের বিএড কলেজে বিনিয়োগ হয়েছে নিয়োগ দুর্নীতির টাকা। যদিও সুজলের কোনও খোঁজ নেই।
গত এপ্রিলে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। এলাকাবাসীর একটি অংশের দাবি, তার পর থেকে তাঁরা আর সুজলের দেখা পাননি। এ বার সেই সুজলের বাড়ি এবং কলেজে পৌঁছে গেল সিবিআই। জানা গিয়েছে, বড়ঞাতেই বিশাল পরিমাণ জমি নিয়ে রয়েছে সুজলের বিএড কলেজ। অসমর্থিত সূত্রে খবর, প্রায় ২০০ একর জমির উপর তৈরি হয়েছে ওই শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ। যার পোশাকি নাম, ‘আল হিলাল ইনস্টিটিউট অ্যান্ড টিচার্স ট্রেনিং কলেজ’। সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা মনে করছেন, এই বিপুল জমির উপর টিচার্স ট্রেনিং কলেজ তৈরি করতে বিনিয়োগ করা হয়েছে নিয়োগ দুর্নীতি থেকে আয় করা টাকা। সেই সূত্রেই কলেজে তল্লাশিতে সিবিআই। এই গোটা পর্বে কোথাও দেখা মেলেনি সুজলের। এলাকাবাসীদের কয়েক জন অবশ্য দাবি করছেন, তাঁরা কানাঘুষো শুনেছেন, সুজল বর্তমানে দুবাইতে রয়েছেন। তিনি কি পালিয়ে গিয়েছেন? তার অবশ্য কোনও উত্তর দিতে পারেননি স্থানীয় মানুষ। সুজলের টিচার্স ট্রেনিং কলেজের মধ্যেই রয়েছে আল হিলাল মিশন বালিকা বিদ্যালয়। জানা গিয়েছে, ওই জায়গাতেই একটি মেডিক্যাল এবং প্যারামেডিক্যাল কলেজ তৈরিরও পরিকল্পনা ছিল সুজলের। এ ছাড়াও সিবিআই সূত্রে খবর, সুজলের মালিকানায় রয়েছে একটি বাগানবাড়িও। যদিও এখনও পর্যন্ত সেই বাগানবাড়ির ঠিকানা বার করতে পারেনি সিবিআই।
সকালে কুলির চৌরাস্তার কাছে সুজলের বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই। তল্লাশির মাঝেই তদন্তকারীরা কথা বলেন সুজলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও। সুজল সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্যও পান তাঁরা। তার পরেই সিবিআইয়ের দলটি কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রহরায় চলে যায় সুজলের টিচার্স ট্রেনিং কলেজে। সেখানেও বিভিন্ন নথি খতিয়ে দেখার কাজ করছেন গোয়েন্দারা।
অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার সকালে ডোমকলের তৃণমূল বিধায়ক জাফিকুল ইসলামের বাড়িতেও হানা দেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। বিধানসভার অধিবেশন চলায় জাফিকুল সেই সময় ছিলেন কলকাতায়। সিবিআইয়ের আধিকারিকরা জাফিকুলের বাড়ির সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পাশাপাশি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্যও চেয়ে নেন। কেন্দ্রীয় এজেন্সির গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েন জাফিকুলের গাড়ির চালক এবং বাড়ির পরিচারিকারা। সূত্রের খবর, জাফিকুলের গ্যারাজের পিছন থেকে দু’টি ব্যাগবোঝাই নথি উদ্ধার করেছেন গোয়েন্দারা। সেই নথিতে কী রয়েছে তা জানতে প্রতিটি নথি আলাদা আলাদা করে খুঁটিয়ে দেখেন সিবিআইয়ের তিন জন আধিকারিক। সিবিআই সূত্রের খবর, তাঁরা বেশ কিছু নথিও বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে যাচ্ছেন।