জগন্নাথ সরকার। ফাইল চিত্র।
বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন শান্তিপুর কেন্দ্রে জয়ী রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার। বুধবার দুপুরে বিধানসভায় গিয়ে স্পিকারের কাছে তিনি ইস্তফাপত্র দেন। ফল প্রকাশের দশ দিনের মাথায় তাঁর এই পদত্যাগে উপনির্বাচনের মুখে গিয়ে দাঁড়াল শান্তিপুর। তাঁর জায়গায় শান্তিপুরে কে প্রার্থী হবেন, তৃণমূল বা সংযুক্ত মোর্চাই বা কাকে দাঁড় করাবে, সেই প্রশ্ন উসকে উঠল।
বছর সাতেক আগে উপনির্বাচন দেখেছিল শান্তিপুর। ২০১৩ সালের শেষ দিকে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন শান্তিপুরের তৎকালীন বিধায়ক অজয় দে। ২০১৪ সালে উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হয়ে তিনিই ফের জিতে আসেন। এ বার তাঁকেই পরাজিত করে জয়ী হন জগন্নাথ। এ বার ভোটে যে কয়েক জন সাংসদকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি, তিনি তার অন্যতম। এর মধ্যে জগন্নাথ বাদে কোচবিহারের দিনহাটা কেন্দ্র থেকে জয়ী নিশীথ প্রামাণিকও এ দিন ইস্তফা দিয়েছেন। বিজেপির একাংশের দাবি ছিল, রাজ্যে ক্ষমতায় এলে এই সাংসদেরা লোকসভা থেকে পদত্যাগ করে রাজ্যে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু দল ক্ষমতায় না আসায় তাঁদের সাংসদ পদেই রেখে দেওয়া হল। তবে এই নিয়ে ঠেস দিতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। শান্তিপুর শহর তৃণমূলের সভাপতি অরবিন্দ মৈত্রের দাবি, “ফের একটা নির্বাচনের বোঝা চাপানো এবং মানুষের রায়কে অসম্মান করার জন্য জগন্নাথ সরকার এবং বিজেপির উচিত শান্তিপুরের মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়া।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলেন, “আবার নির্বাচনের বাড়তি খরচ। এই কঠিন সময়ে যার কোনও দরকার ছিল না। সাংসদকে কেন বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড় করানো হল তা ওঁরাই বলতে পারবেন।” শান্তিপুরের কংগ্রেস প্রার্থী তথা প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ঋজু ঘোষাল বলেন, “ওরা প্রার্থী খুঁজে না পেয়ে সাংসদদের দাড় করিয়েছিল। এবারে উপনির্বাচনের বোঝা চাপল মানুষের উপর।”
বিজেপির তরফে অবশ্য পাল্টা ২০১৪ সালের উপনির্বাচনের প্রসঙ্গও তোলা হচ্ছে। ইস্তফা দিয়ে জগন্নাথ বলেন, “দলের নির্দেশে বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলাম। দলের নির্দেশেই ইস্তফা দিয়েছি। তৃণমূলের অজয় দে-র ইস্তফার জন্যও তো উপনির্বাচন হয়েছে এর আগে।” যদিও তৃণমূলের দাবি, সেই উপনির্বাচন হয়েছিল লোকসভা ভোটের সঙ্গে। আর তখন বিধানসভার মেয়াদ তিন বছর, এ ভাবে সদ্য জিতে পদত্যাগের ফলে ফের নির্বাচন হয়নি। নদিয়া জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বাণীকুমার রায় বলেন, “যখন রাজ্যকে টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন কিনতে হচ্ছে, সেই সময়ে আরও একটি নির্বাচনের খরচ চাপিয়ে দেওয়া হল। আপাতত বিধায়ক নেই শান্তিপুরে। মানুষের সমস্যা হবে।” তবে জগন্নাথ অবশ্য দাবি করেন, “সাংসদ হিসাবে কাজ করে যাব। মানুষ আমায় পাবেন।”