চলল না বাস, দিনভর ভোগান্তি

বাস ধর্মঘটের জেরে সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে ভোগান্তিতে পড়তে হল মানুষকে। অনেককেই ছোটগাড়ি, ট্রেকারে বাদুরঝোলা হয়ে কাজের জায়গায় যেতে দেখা গিয়েছে। সুযোগ বুঝে বাড়তি ভাড়া হাঁকিয়েছে ট্রেকার, ছোটো গাড়ি। এ দিকে, সামনে ঈদ। এ ভাবে ধর্মঘট চললে ঈদের বাজার কতটা জমবে তা নিয়েও ধন্দে জেলার ব্যবসায়ী মহল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৫ ০১:২৪
Share:

মুর্শিদাবাদ জেলাজুড়ে অনির্দিষ্ট কালের বন্ধ বেসরকারি বাস পরিষেবা। সোমবার সরকারি বাসে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে এ ভাবেই চলল যাতায়াত।

বাস ধর্মঘটের জেরে সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে ভোগান্তিতে পড়তে হল মানুষকে। অনেককেই ছোটগাড়ি, ট্রেকারে বাদুরঝোলা হয়ে কাজের জায়গায় যেতে দেখা গিয়েছে। সুযোগ বুঝে বাড়তি ভাড়া হাঁকিয়েছে ট্রেকার, ছোটো গাড়ি। এ দিকে, সামনে ঈদ। এ ভাবে ধর্মঘট চললে ঈদের বাজার কতটা জমবে তা নিয়েও ধন্দে জেলার ব্যবসায়ী মহল।

Advertisement

জেলাজুড়ে অনির্দিষ্ট কালের কালের জন্য বেসরকারি বাস ধমর্ঘটের কথা আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। ফলে সোমবার কোনও বেসরকারি বাস রাস্তায় নামেনি। অনেকেই তাই ট্রেনপথে গন্তব্যে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বিপত্তি সেখানেও। কেমন?

এ দিন বেলা সাড়ে ৮টা নাগাদ রেজিনগরের ১০৩ নম্বর রেলগেটে একটি বালিবোঝাই ট্রাক বিকল হয়ে যায়। ফলে কৃষ্ণনগর-লালগোলা শাখায় তিনটি ডাউন ট্রেন ও দু’টি আপ ট্রেন মাঝপথে থমকে যায়। ডাউন লালগোলা প্যাসেঞ্জার প্রায় এক ঘণ্টা বেলডাঙা স্টেশনে দাঁড়িয়ে পরে। ফলে নিত্যযাত্রী থেকে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া সকলকেই ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়। বিশেষ করে রেজিনগর থেকে বেলডাঙা হয়ে বহরমপুরে যাঁরা যাতায়াত করেন তাঁরা সমস্যায় পরেন।

Advertisement

স্কুল শিক্ষিকা সুদেষ্ণা মণ্ডল বলেন, ‘‘বাস বন্ধ বলে রেজিনগরে যাওয়ার জন্য ট্রেন ধরতে বেলডাঙা স্টেশনে যাই। গিয়ে শুনি ট্রেন চলছে না!’’ স্থানীয় ব্যবসায়ী রমজান আলি বলেন, ‘‘ঈদের জিনিস কিনতে বহরমপুর যাচ্ছিলাম। বাসস্ট্যান্ডে বাস না পেয়ে ট্রেনে যাব ভেবেছিলাম। ট্রেনও বন্ধ শুনে নানা জায়গা ঘুরে বহরমপুরে যেতে হয়।’’ সকাল ১০টার সময় লরি, বালি সরানো হলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

বাসের জন্য অপেক্ষা। বহরমপুরে।

এ দিকে, সারা বছর টুকটাক কেনাকাটা হলেও ঈদ ও পুজোর কেনাকাটার দিকে চেয়ে থাকেন ব্যবসায়ীরা। বাজারে ক্রেতাদের আসাও শুরু হয়েছিল। তাই আচমকা এই বাস ধর্মঘটে কার্যত মাথায় হাত তাঁদের। এ জন্য প্রশাসনকে দায়ী করেছেন বাস মাকিল সংগঠনের কান্দি মহকুমা বাস সিন্ডিকেটের সম্পাদক সন্দীপ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা জানেন। এতে উৎসবের সময় ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হচ্ছে ঠিকই। তবে আমাদের তো সারা বছর ধরে ক্ষতি সামলাতে হয়।”

তিনি জানান, জুন মাসে জাতীয় সড়কের কর নিয়ে জঙ্গিপুর এলাকায় টানা পাঁচ দিন ধর্মঘট হয়েছিল। তখন প্রশাসনের কর্তাদের কথায় বিশ্বাস করে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছিল। সমস্যার সমাধানে ১৫ দিন সময় চেয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু আজও কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি। তাই বাধ্য হয়ে ফের জেলা জুড়ে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।

সোমবার থেকে মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বাস ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাস মালিক সংগঠন। তাদের দাবি, জেলাজুড়ে সমস্ত রুটে লাইসেন্সহীন যানবাহন চলায় ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে বাস মালিকদের। বারবার প্রশাসনের কর্তাদের সমস্যার সমাধান চেয়ে কোনও লাভ না হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন তাঁরা।

কান্দি মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক তারকেশ্বর প্রামাণিক বলেন, “বাস মালিকদের আন্দোলন সমর্থনযোগ্য। তবে এখন উৎসবের মরসুম। পরে আন্দোলন করলে ভাল হত। এতে ব্যবসায়ীদের ক্ষতির মুখে পরতে হবে।”

বহরমপুরে গৌতম প্রামাণিকের তোলা ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement