৯৯৮ সালের জলঙ্গির পদ্মায় বাস দুর্ঘটনায় করিমপুর এলাকার ৬৪ জন ছাত্রছাত্রী মৃত্যু হয়েছিল। স্বজন হারাদের পাশে দাঁড়াতে তৎকালীন রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য করিমপুর এসেছিলেন। অমিতাভ বিশ্বাস, করিমপুর
দু’জনে দীর্ঘ দিনের সুহৃদ, সহযোদ্ধা। মাত্র এক দিনের ছোট-বড়। অনিলের জন্মদিন ২ মার্চ, বুদ্ধদেবের জন্মদিন একই বছরের ১ মার্চ। আর এক সঙ্গী বিমান বসু বছর ছয়েকের বড়।
করিমপুরে এই ত্রয়ীর একসঙ্গে পা পড়েছিল এক ভয়ানক দুর্ঘটনার আবহে। ১৯৯৮ সালের ১৩ জানুয়ারি জলঙ্গির পদ্মায় বাস পড়ে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক মিলিয়ে ৬৪ জনের মৃত্যু হয়। অধিকাংশই করিমপুরের। বামফ্রন্টের তৎকালীন তথ্য ও সংস্কৃৃৃতি মন্ত্রী বুদ্ধদেব চলে আসেন। সঙ্গে ছিলেন সিপিএমের তদানীন্তন রাজ্য সম্পাদক অনিল আর রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান। করিমপুর হাই স্কুলে বৈঠক করে তাঁরা জানান, চাঁদা তুলে প্রতিটি পরিবারকে যথাসাধ্য সাহায্য করতে হবে।
করিমপুরের ভূমিপুত্র অনিলের দাদা অজিত বিশ্বাসের বাড়ি ওই স্কুলের পাশেই। সেখানেই দুপুরে তাঁদের বিশ্রাম আর খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল। অজিত বিশ্বাসের বড় ছেলে অখিল বলেন, “কাকুর সঙ্গে এসে বুদ্ধবাবু সামান্য সময়েই বাড়ির সকলের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন। সেই দিনটাার কথা খুব মনে পড়ছে।”
বুদ্ধবাবুর সাদাসিধা আচরণের কথা বলছেন দলের প্রবীণ নেতাকর্মীরাও। সিপিএমের শিকারপুর লোকাল কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক শঙ্কর মণ্ডলের মনে পড়়ছে, "২০১১-র ভোটের প্রচারে উনি বেতাই কলেজ মাঠের জনসভায় আসেন। ওঁর সঙ্গে আলাপ করে মনেই হয়নি, এত উঁচু স্তরের নেতা।" দলের তেহট্ট দক্ষিণ এরিয়া সম্পাদক সুবোধ বিশ্বাস বলেন, “ছাত্রজীবন থেকে ওঁর সঙ্গে আমার পরিচয়। তখন আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জিএস, সর্বক্ষণ এসএফআই অফিসে পড়ে থাকতাম। ওই সময় কাছ থেকে ওঁকে দেখেছি। ১৯৯৬ সালে তেহট্টে এক অনুষ্ঠানে আমায় মঞ্চে দেখে উনি কাছে গিয়ে বসতে বলেন। সে দিন আনন্দে বুকটা ভরে উঠেছিল।”