ভারত-বাংলাদেশ, পড়শি দু’দেশের সীমারেখায় কাঁটাতার থাকলেও পদ্মার মাঝ বরাবর অদৃশ্য জলরেখা দিয়ে সীমানা আঁকা রয়েছে দু’দেশের। সেই সীমানা ভাঙছে কি না কেউ— দেখভালের জন্য বিএসএফ এবং ও পাড়ের বিজিবি’র সতর্কতা নিয়েও এখন প্রশ্ন তুলছেন পদ্মা পাড়ের গ্রামবাসীরা।
সম্প্রতি, সীমান্তরক্ষায় দু’দেশের প্রহরায় থাকা বিজিবি-বিএসএফের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকায় তা নিয়ে ফের চর্চা শুরু হয়েছে। সীমান্তের বাসিন্দাদের দাবি, বিএসএফের যত কড়াকড়ি সবই ভারতীয় চর গ্রামের বাসিন্দাদের উপরে। এক চরের বাসিন্দার কথায়, ‘‘যেখানে বিএসএফের জওয়ানদের বন্দুক তাক করে থাকার কথা বাংলাদেশের দিকে, সেখানে বন্দুকের নলটা থাকে আমাদের দেশের দিকেই। মাছ ধরতে বা চাষের কাজে যেতে গেলে দিতে হয় হাজারও কৈফিয়ৎ। অন্য দিকে বাংলাদেশিরা পদ্মায় মাছ ধরা হোক বা চাষের কাজেই হোক নির্বিঘ্নে কাজ হাসিল করে যাচ্ছে ভারতীয় এলাকায় ঢুকে।’’
সীমান্তের একটি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সম্পাদক জুলফিকার আলির দাবি, ‘‘আক্ষরিক অর্থেই বিএসএফ আমাদের দেশের বড় একটা অংশকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দিচ্ছে। ওরা নির্বিঘ্নে চলে আসছে আমাদের এলাকায়, পদ্মায় বা চাষের মাঠে। গবাদিপশু দিয়ে নষ্ট করছে ফসল, কখনও কখনও ফসল কেটে নিয়ে চলে যাচ্ছে চরের মাঠ থেকে। বিএসএফের কাছে কোনও প্রতিকার পাই না।’’
কাকমারি এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মৎস্যজীবী বলছেন, ‘‘আমরা মাছ ধরতে গেলে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড কখনও আবার মৎস্যজীবীর কার্ড দেখতে চায় বিএসএফ। ভোরবেলায় পদ্মাপাড়ে হাজির হলেও সকাল ৭টা না বাজলে নামতে দেওয়া হয় না পদ্মায়। আবার সন্ধ্যার আগেই উঠতে হয় পদ্মা ছেড়ে, কিন্তু বাংলাদেশি ধীবরদের কোনও বাধা-বিপত্তি নেই, ওরা অনায়াসেই ভেসে বেড়ায় পদ্মায়। মাছ ধরার জন্য নানা রকমের সাহায্য তারা পায় ওদেশের সীমান্তরক্ষীদের কাছ থেকে।’’
মৎস্যজীবীদের বড় একটা অংশের দাবি, ‘‘কেবল সীমানা নয়, বিএসএফের ক্ষেত্রে ভাষাও একটা বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় আমাদের কাছে। আমাদের অবস্থাটা তাদের সবসময় প্রাণ খুলে বোঝাতে পারি না। বাংলা বলি বলেই মনে করে আমরাও বাংলাদেশি!’’