প্রতীকী ছবি।
বর্ডার রোড দিয়ে যাতায়াতে বাধা দিচ্ছে বিএসএফ। ফলে শিক্ষকেরা স্কুল যেতে পারছেন না বলে অভিযোগ। বন্ধ হয়ে গিয়েছে সীমান্তবর্তী পাঁচটি প্রাথমিক স্কুল। প্রজাতন্ত্র দিবসে জাতীয় পতাকাও তোলা হয়নি । কবে অবস্থা স্বাভাবিক হবে, তা স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ, কেউই বলতে পারেনি।
নদিয়ার ভীমপুরে হুদোপাড়া, রাঙিয়ারপোতা ও মহখোলা গ্রামে যেতে বিএসএফের বর্ডার রোড ব্যবহার করতে হয়। ক’দিন ধরে পথচারীদের বিএসএফ-এর হাতে হয়রান হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। গ্রামবাসীরা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন। স্থানীয় পাঁচটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকেরা প্রশাসনের কাছে অভিযোগে জানান, গত শুক্রবার হয়রানি চরম আকার নেয়। তার পরেই তাঁরা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করেছেন। জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানকেও তাঁরা বিষয়টি লিখিত ভাবে জানিয়েছেন।
মলুয়াপাড়া ক্যাম্পের ৫৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের অ্যাসিস্ট্যান্ট কোম্পানি কমান্ডান্ট শরৎ সামন্ত অবশ্য দাবি করেন, “বর্ডার রোডের অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। সকলেই এই রাস্তা ব্যবহার করছেন। বর্ষায় আমরা নিষেধ করি না। কিন্তু সারা বছর এমন চলতে দেওয়া যায় না। বিকল্প রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে বলা হয়েছে।” তাঁর আরও ব্যাখ্যা, “এই এলাকায় পাচার একটা বড় সমস্যা। দিনের বেলা পাচারকারীরা এলাকা দেখতে আসে। আমরা তাই সকলের উপরেই নজরদারি চালাচ্ছি।” চাপড়ার বিডিও অনিমেষকান্তি মান্না জানিয়েছেন, বিএসএফ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলা হচ্ছে।
মলুয়াপড়া ক্যাম্পের অধীন এই বর্ডার রোড। বিকল্প পথ না থাকায় এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতে বাধ্য হন হুদোপাড়া প্রাথমিক স্কুল, রাঙিয়ারপোতা জিএসএফ প্রাথমিক স্কুল, রাঙিয়ারপোতা পশ্চিমপাড়া প্রাথমিক স্কুল, মহখোলা প্রাথমিক স্কুল ও মহখোলা উত্তরপাড়া প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকেরা। রাঙিয়ারপোতা পশ্চিমপাড়া প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক মিহির বিশ্বাস বলছেন, “বেশ কয়েক দিন ধরেই সমস্যাটা শুরু হয়েছিল। বিএসএফ জওয়ানদের প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের পরিচয়পত্র দেখানোর পরেও ছাড় পাচ্ছিলাম না। শুক্রবার তা চরম সীমায় পোঁছায়।” তাঁর কথায়, “আমাদের দীর্ঘ সময় আটকে রাখা হয়। তার পর মাঠের মধ্যে অন্য একটা মাটির রাস্তা দিয়ে স্কুলে যাই। ওঁরা যে ভাবে হুমকি দিয়ে বর্ডার রোড ব্যবহার করতে বারণ করেছেন তাতে আমাদের আর অন্য উপায় রইল না।”
হুদোপাড়া প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক সমর কুমার ভক্ত বলেন, “আমরা প্রজাতন্ত্র দিবসে জাতীয় পতাকাও তুলতে পারলাম না। এ ভাবে অপমানিত হয়ে স্কুলে যাওয়া আর আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। আমরা বাধ্য হয়েই তাই সব জায়গায় লিখিত ভাবে বিষয়টি জানিয়েছি।”