BSF

BSF: ভুল করে ঢুকে পড়া মহিলা ফিরলেন দেশে

আটকের পরে দেখা যায় ওই মহিলা প্রতিবন্ধী, ডান হাত অকেজো। বিএসএফের জিজ্ঞাসাবাদে মহিলা তাঁর নাম বলেন কোহিমা বিবি।

Advertisement

বিমান হাজরা

জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২১ ০৭:৩১
Share:

সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সঙ্গে বাংলাদেশের মহিলা। নিজস্ব চিত্র

দুই দেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে ফের সীমান্তে বিএসএফ জওয়ানদের হাতে আটক এক প্রতিবন্ধী মহিলাকে রবিবার বিকেলে বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর হাতে তুলে দিল বিএসএফ। অসাবধানতাবশত আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে ওই মহিলা ঢুকে পড়েছিলেন ভারতীয় সীমান্তের ভিতরে।

Advertisement

আটকের পরে দেখা যায় ওই মহিলা প্রতিবন্ধী, ডান হাত অকেজো। বিএসএফের জিজ্ঞাসাবাদে মহিলা তাঁর নাম বলেন কোহিমা বিবি। বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার গোপীনাথপুর গ্রামে। ভুল করে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে কখন ভারতের সীমানায় ঢুকে পড়েছেন বুঝতে পারেননি। শুভেচ্ছা ও মানবিকতার নিদর্শন হিসেবে এরপরই দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে পতাকা বৈঠকের পর ধৃত মহিলাকে বিএসএফ এর কোম্পানি কমান্ডার অরবিন্দকুমার বিজিবির জওয়ানদের কাছে হস্তান্তর করেন। সেখানে প্রতিবন্ধী মহিলার পরিবারের লোকজনও হাজির ছিলেন।

১৪১ নম্বর ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডিং অফিসার অরবিন্দ কুমার জানান, দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে। ভাল সম্পর্ক রয়েছে দুই দেশের সীমান্ত বাহিনীর মধ্যেও। কোনও অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে মহিলা জড়িত ছিলেন না। সীমান্তে ঢুকে পড়েছিলেন নেহতই ভুলবশত। তাই আন্তর্জাতিক নীতি মেনেই তাকে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Advertisement

তবে এই প্রথম নয়।
সম্পর্কের টানে সীমান্তের বেড়া পেরিয়ে দাদুর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল ১২ বছরের নাতি গত ২২ জুলাই। কিন্তু দেখা করে বাংলাদেশে নিজেদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পথে সীমান্ত পেরোতে গিয়ে বিএসএফের জওয়ানদের হাতে ধরা পড়ে যায় নাতি। প্রথমে গ্রেফতার করলেও সম্পর্কের মানবিক টানের কথা মাথায় রেখে সেদিনই ধৃত ১২ বছরের নাতিকে বিএসএফ জওয়ানরা বাংলা দেশ বর্ডার গার্ডের হাতে তুলে দেন।
দাদু ইরামুল শেখ থাকেন ভারতের সীমান্ত লাগোয়া রঘুনাথগঞ্জের বড়শিমুল গ্রাম পঞ্চায়েতের গ্রাম বাজিতপুরে। নাতি নয়ন আলি সীমান্তের অপর পাড় বাংলাদেশের জোহরপুরের বাসিন্দা।
নদী পেরিয়ে পৌঁছে গেছিল দাদু ইরামুল শেখের বাজিতপুরের বাড়িতে। বিএসএফের মতে, ছেলেটি তার দাদুর সাথে দেখা করতে সীমান্ত পেরুলেও ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে ও সীমান্তের মানুষের সদ্ভাবনার স

ম্মান জানিয়ে ছেলেটিকে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

গঙ্গায় মাছ ধরতে এসে ভগবানগোলার কাছে নদীপথে ভারতীয় সীমান্তে ঢুকে পড়া ৪ আটক বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে একই ভাবে ছেড়ে দিয়েছিল বিএসএফ গত বছর জুলাইতে। বাড়ি রাজশাহীর হরিপুর থানার বেলবোনা গ্রামে। গঙ্গা নদীতে ভগবানগোলার মদনঘাটের কাছে মৎস্যজীবীরা এদেশের সীমানার মধ্যে ঢুকে পড়েছিল। তদন্তে দেখা যায় এটা নেহাতই ভুলক্রমে হয়েছে। জলপথে এমন ভুল মাঝে মধ্যে ঘটেই থাকে। পরে দু’দেশের সীমান্ত বাহিনীর সঙ্গে ফ্ল্যাগ মিটিং করে বিকেলেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় নৌকো সমেত।

দুই দেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে নিমতিতা সীমান্তে বিএসএফ জওয়ানদের হাতে আটক পাঁচ বাংলাদেশি তরুণ ও কিশোরকে বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিল বিএসএফ গত নভেম্বরে। তাদের সকলেরই বাড়ি রাজসাহী। পাঁচ ভাই মিলে দল বেঁধে তারা গঙ্গা পেরিয়ে ভারতীয় সীমান্তে ঢুকতেই প্রহরারত ৭৮ নম্বর ব্যাটালিয়ানের বিএসএফ জওয়ানদের হতে ধরা পড়ে যায়।
বিএসএফের তদন্তে উঠে আসে, কাজ নেই সে দেশে। তাই শ্রমিকের কাজ করতেই তারা কলকাতায় যাচ্ছিল। এরপরই দুই দেশের সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে ফ্ল্যাগ মিটিং বসে। যেহেতু তারা সীমান্ত অনুপ্রবেশ ছাড়া পাচার বা কোনও অপরাধমূলক ঘটনায় জড়িত নয় তাই ৫ ভাইকেই বাংলাদেশের হাতে তুলে দেয় বিএসএফ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement