—প্রতীকী ছবি
বয়সে বড় বন্ধুর সঙ্গে খুনসুটির সময় বন্ধুর হাতে কামড়ে দিয়েছিল বছর পাঁচেকের রনিত পাল। একবার নয়, দিন কয়েক আগে একবার ও শনিবার বিকেলে কামড়ে দেওয়ার ফলেই মাথায় খুন চেপে গিয়েছিল বছর তেরর বন্ধুর মাথায়। শনিবার একা পেয়ে সেই ক্ষোভ থেকেই ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে দেয় রনিতের। ঘটনার পর কোনও ক্রমে বাড়িতে পৌঁছে দিদিমার কোলে লুটিয়ে পড়ে ছোট্ট শিশু। তারপরেই ইসলামপুর গ্রামীণ হাসপাতাল সেখান থেকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হয়ে কলকাতা যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় তার। ঘটনার পর হতভম্ব হয়ে পড়ে ইসলামপুরের চক কালিতলা এলাকা। আত্মীয় থেকে গ্রামবাসীরা কেউই বুঝে উঠতে পারছেন না কে এমন কাজ করেছে। শেষ পর্যন্ত খবর পেয়ে মাঠে নামে ইসলামপুর থানার পুলিশ। আর পোশাকে থাকা রক্তের দাগ দেখে সন্ধান মেলে নাবালক খুনির। রবিবার রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার তাকে জুভেনাইল আদালতে তোলা হলে সেখান থেকেই জেলার একটি হোমে পাঠানো হয়।
পুলিশের দাবি, শনিবার বিকেলে রক্তমাখা দেহ নিয়ে যখন বাড়িতে ফিরেছিল রনিত পাল কিছুই বলতে পারেনি। সংজ্ঞা হারিয়ে লুটিয়ে পড়েছিল দিদিমা রিনা দে'র কোলে। ফলে শনিবার বিকেল থেকেই কে এমন ঘটনা ঘটালে তা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছিল চক কালীতলা এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রথমে কেউ ভাবতেই পারেনি খেলাধুলা নিয়ে গন্ডগোলের জেরে ৫ বছরের শিশুকে কেউ থেতলে মারতে পারে।
ঘটনার খবর পেয়ে মাঠে নামে পুলিশ, তবে খুব সহজে ঘটনার রহস্য উদঘাটন হয়নি। ইসলামপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশ অফিসার এবং সিভিকদের আলাদা আলাদা টিম গঠন করি এবং গোটা পাড়ায় কারা এই বাচ্চাটির সঙ্গে খেলাধুলো করত তার তথ্য সংগ্রহ করে অভিযান শুরু করি শনিবার থেকে। কিন্তু সেই দিন কোনও সন্ধান মেলেনি, রবিবার গোপনে একটা খবর আসে থানায় এলাকার একটি বাচ্চার পোশাকে রক্তের দাগ আছে বলে। তারপরেই ওই নাবালককে তুলে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে প্রথমে কিছুক্ষণ পরেই গোটা ঘটনার কথা স্বীকার করে।
কিভাবে ঘটেছিল এই ঘটনা? পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ওই নাবালক জানিয়েছে, দিন কয়েক আগে একবার খেলার সময় তাকে কামড়ে দিয়েছিল রনিত। শনিবার আবারও খেলতে খেলতে ঝামেলা হয়, আর আবারও কামড়ে দেয় সে। পুলিশের দাবি, আর তাতেই খুন চেপে বসে মাথায়, পাশে পড়ে থাকা একটা ইট দিয়ে মাথায় মেরে এলাকা থেকে পালিয়ে গিয়েছিল বলে দাবি ওই নাবালকের। ছোটবেলা থেকেই অনটনের সংসারে বড় হয়েছে নাবালক। তার বাবা খুব ছোটবেলায় তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। মাকে নিয়ে দিদিমার বাড়িতেই থাকে সে। তবে সে মারকুটে স্বভাবের নয়।