শীতঘুম ভেঙে ‘ছন্দে ফেরা’

পকেট পাচারে উদ্বিগ্ন সীমান্ত

আবার সে এসেছে ফিরিয়া!সীমান্তের পথে ধুলো উড়িয়ে ফের ছুটছে গাঁজা, কাশির সিরাপ কিংবা হেরোইন। গত বছর নভেম্বরে নোট বাতিলের পরে বিপাকে পড়েছিল পাচারকারীরা। সেই সময় তাদের অনেকেই আক্ষেপ করেছিল, ‘‘ভরা মরসুমে সরকারের এমন সিদ্ধান্ত পুরো কারবারটাই মাটি করে দিল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৭ ০১:৩৭
Share:

বাজেয়াপ্ত: মুরুটিয়া সীমান্তে উদ্ধার হওয়া গাঁজা। নিজস্ব চিত্র

আবার সে এসেছে ফিরিয়া!

Advertisement

সীমান্তের পথে ধুলো উড়িয়ে ফের ছুটছে গাঁজা, কাশির সিরাপ কিংবা হেরোইন। গত বছর নভেম্বরে নোট বাতিলের পরে বিপাকে পড়েছিল পাচারকারীরা। সেই সময় তাদের অনেকেই আক্ষেপ করেছিল, ‘‘ভরা মরসুমে সরকারের এমন সিদ্ধান্ত পুরো কারবারটাই মাটি করে দিল। এই ধাক্কা সামলাতে বড় বেগ পেতে হবে।’’

ইতিমধ্যে কেটে গিয়েছে বেশ কয়েক মাস। নগদ সমস্যাও প্রায় মিটে গিয়েছে। ফলে শীতঘুম থেকে উঠে ফের সক্রিয় হচ্ছে পাচারকারীরা। সম্প্রতি বিএসএফ ও পুলিশের যৌথ উদ্যোগে নদিয়ার মথুরাপুর, মুর্শিদাবাদের রানিনগর, লালগোলায় গাঁজা ও হেরোইন উদ্ধারের ঘটনাই প্রমাণ করে দিচ্ছে ‘ছন্দে’ ফিরছে সীমান্ত।

Advertisement

সীমান্তের বাসিন্দারাও সে কথা কবুল করছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, বৈধ কারবারের মতো বেআইনি পাচারও চলে একটা নির্দিষ্ট ছন্দে। নোট বাতিলের পরে সেই ছন্দটাই কেটে গিয়েছিল। স্বস্তিতে ছিলেন তাঁরাও। কিন্তু মাসখানেক থেকে ফের সীমান্তে আনাগোনা বেড়ছে অপরিচিত মুখের। যাতায়াত বেড়েছে মোটরবাইক ও গাড়ির।

১৯ ফেব্রুয়ারি মুরুটিয়ার মথুরাপুর সীমান্তে ৩০৫০ বোতল কাশির সিরাপ, ২৩ ফেব্রুয়ারি পাকশি সীমান্তে গাঁজা আটক করেছে বিএসএফ। মাসখানেক আগে রানিনগর সীমান্তে পুলিশ তাড়া করে ধরেছে গাড়িবোঝাই প্রায় ১ কুইন্টাল ২০ কিলোগ্রাম গাঁজা। ধরা পড়েছে দু’জন পাচারকারী।

ওই এলাকাতেই কাশির সিরাপ নিয়ে মোটরবাইক-সহ ধরা পড়েছে বেশ কয়েক জন। দিন পনেরো আগে জলঙ্গিতেও গাঁজা ও কাশির সিরাপ নিয়ে দু’জন ধরা পড়েছে। সম্প্রতি লালগোলার পুলিশ পণ্ডিতপুর ও দেওয়ানসরাই থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকার মাদক উদ্ধার করেছে। গ্রেফতার হয়েছে পাঁচ জন।

বিএসএফ ও পুলিশের দাবি, নোট বাতিলের পরে পাচারে অনেকটাই লাগাম টানা গিয়েছে। ছোট ছোট দু’একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। তবুও পাচার হওয়ার আগেই সে সব জিনিসপত্র আটক করা হয়েছে। কয়েক জন ধরাও পড়েছে। যে ভাবে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে তাতে এমন ঘটনাও আর ঘটবে না। কিন্তু সত্যিই কি তাই? সীমান্তের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, নোট বাতিলের পর থেকে গরু পাচার কিছুটা কমেছে ঠিকই। কিন্তু পকেট-পাচারের প্রবণতা বেড়ছে। পকেট-পাচার কী? ডোমকলের এক পাচারকারী ধরিয়ে দিচ্ছেন, যে সমস্ত জিনিস পকেটে করেই নিয়ে যাওয়া যায় সেগুলোই (গাঁজা, কাশির সিরাপ, হেরোইন) সংক্ষেপে পকেট-আইটেম।

ওই পাচারকারীর কথায়, ‘‘সীমান্তে যখন প্রথম কাঁটাতার বসানো হল, তখনও আমরা একই সমস্যায় পড়েছিলাম। কিন্তু আমাদেরও তো থেমে থাকলে চলবে না। কারবার শিকেয় উঠলে খাব কী? এখন তো পরিস্থিতি আবার প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। ব্যাঙ্ক, এটিএমে পর্যাপ্ত টাকা মিলছে। ফলে আমরাও ফের কারবারে মন দিয়েছি।’’

তথ্য: বিমান হাজরা, কল্লোল প্রামাণিক ও সুজাউদ্দিন

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement