জঞ্জাল সরানোর দাবিতে অবরোধ। কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র
চোখের আলো নেই ওদের। দেখতে পায় না বর্ষায় রাস্তাঘাটের কী অবস্থা হয়। তবে সামাজিক দায়িত্ব পালন করা থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকল না ওরা। ওরা শহরের দৃষ্টিহীন পড়ুয়া।
শহরের জঞ্জাল পরিষ্কারের দাবিতে এ বার রাস্তায় নামল পড়ুয়ারা। মঙ্গলবার কৃষ্ণনগরের রাজা রোড এলাকায় বেশ কিছু ক্ষণ রাস্তা অবরোধ করে রাখে হেলেন কেলার স্মৃতি বিদ্যানিকেতনের দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা। পরে কোতোয়ালি থানার পুলিশ এসে তাদেরকে এলাকার জঞ্জাল পরিষ্কারের প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। ওই দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে হেলেন কেলার স্কুলের পাশে রাজা রোডের উপরে ময়লা আবর্জনা ফেলা হয়। আগে পুরসভা থেকে নিয়মিত পরিষ্কার করা হত। কিন্তু সম্প্রতি সে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ দিন ধরে ময়লা জমতে থাকে। আবর্জনা জমতে জমতে এক সময়ে রাস্তার উপরে এসে পড়ে, যা স্থানীয় মানুষদের চলাফেরায় অসুবিধা তৈরি করছিল। দুর্গন্ধে পড়ুয়ারাও ক্লাস করতে পারছিল না।
বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে জানানো হয়। কিন্তু কোনও লাভ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তারা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এ দিন তারা সকাল ১০টার পর রাস্তা অবরোধ করে।
স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল তপন সরকার বলছেন, “আগে তবুও নিয়মিত আবর্জনা পরিষ্কার হত। ক’দিন ধরে সেটাও বন্ধ। ফলে, জঞ্জালের পাহাড় হয়ে রাস্তার উপরে উপচে পড়ছে। তাতে বর্ষার জল পড়ে নোংরা পচে গিয়ে অত্যন্ত দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। ক্লাস করানো যাচ্ছিল না।”
প্রথমে ওই পড়ুয়ারা অবরোধ শুরু করলেও পরে ধীরে ধীরে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে যোগ দিতে শুরু করেন। পরে পুলিশ এসে আশ্বাস দিলে অবরোধ তোলা হয়। এর পরেই পুরসভার পক্ষ থেকে স্কুলের সামনে থেকে সব জঞ্জাল তুলে ফেলা হয়।
কৃষ্ণনগর সদর মহকুমা শাসক সৌমেন দত্ত বলেন, “শুধু ওই এলকায় নয়, গোটা শহরের ময়লা নিয়মিত তোলার জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করা হচ্ছে।” সদিচ্ছা থাকলে যে কোনও কাজেই যে চোখের আলো অন্তরায় নয়, তা আরও এক বার প্রমাণ করল ওই স্কুলের দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা।